ভারতের মহারাষ্ট্রে এক পরিযায়ী বাঙালি শ্রমিককে নৃশংসভাবে হত্যার পর লাশ বস্তাবন্দি করে পানিতে ফেলে দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে মহারাষ্ট্রের ভাসি পুলিশ থানার অন্তর্গত ওয়াসিগাও এলাকায়।
জানা গেছে, মহারাষ্ট্রে কাজ করতে যাওয়া ৩৩ বছরের আবু বক্কর মণ্ডলকে কুপিয়ে খুন করা হয়। এরপর লাশ টুকরো টুকরো করা হয় এবং বস্তায় ভরে ডোবার পানিতে ফেলে দেওয়া হয়। পুলিশ জানিয়েছে, আবু বক্কর মণ্ডলের বাড়ি পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়া থানার রুদ্রপুরে। পরিবার সূত্র জানিয়েছে, তিনি কয়েক বছর ধরে মহারাষ্ট্রে শ্রমিকের কাজ করছিলেন। মূলত রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন আবু বক্কর। ওয়াসিগাও এলাকায় স্ত্রী ফতেমা বিবিকে নিয়ে তিনি বসবাস করতেন। গত ২০ জুলাই সন্ধ্যার পর থেকে আবু বক্কর মণ্ডলের কোনো খোঁজ পাচ্ছিল না পরিবার। মোবাইলের সুইচও বন্ধ ছিল। পরদিনও খোঁজাখুঁজির পর তার সন্ধান না পাওয়া গেলে স্থানীয় ভাসি থানায় একটি নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করে পরিবার। অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নামে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, নিখোঁজ হওয়ার দুই দিন পর ওয়াসিগাও এলাকায় তার ভাড়া করা বাসা থেকে কিছুটা দূরে একটি ডোবার ভিতর থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় আবু বক্করের লাশের টুকরো উদ্ধার করা হয়। এদিকে নিহত আবু বক্কর মণ্ডলের পরিবারের পক্ষ থেকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির কাছে আবেদন জানিয়ে বলা হয়েছে, হত্যাকারীকে যেন গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হয়। অবশ্য পুলিশ বলছে, এ খুনের পেছনে কোনো পারিবারিক, ব্যবসায়িক বা ব্যক্তিগত শত্রুতা আছে কি না সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই সঙ্গে এটাও দেখা হচ্ছে যে, শুধু বাঙালি বিদ্বেষের কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে কি না।
পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে এই হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে। দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘বাঙালির গর্জে ওঠার সময় এসেছে। কারণ কাল হয়তো আরও এক আবু বক্কর মণ্ডল, আরও এক বাঙালি শ্রমিকের নিষ্পাপ রক্ত ঝরবে। এ হিংসা বন্ধ করতে প্রয়োজনে প্রত্যেক বাঙালিকে দিল্লির রাজপথে সংগঠিত আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।’