রংপুর অঞ্চলের পাট চাষিরা পাট ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। দাম ভাল থাকায় পাট চাষি ও ব্যবসায়ীরা খুশি। প্রতি মণ সাড়ে ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এই অঞ্চলের পাট চাষিরা এবার পাট ও পাটখড়ি বিক্রি করে ১৪০০ কোটি টাকার বেশি ঘরে তুলবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
কৃষি অফিস ও ব্যবসায়ীদের তথ্য অনুসারে, রংপুর অঞ্চলের ৫ জেলায় প্রায় ৪৯ হাজার হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। দেশি, তোষা, মেস্তা এবং কেনাফ জাতের পাট চাষ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে ২ দশমিক ২৪ মেট্রিক টন উৎপাদন হয়েছে। প্রতি হেক্টরে ১২ দশমিক ৩০ বেল পাট উৎপাদন হয়েছে। সেই হিসেবে এবার ৬ লাখ ২ হাজার বেল পাট উৎপাদন হবে। প্রতি মণ পাট বিক্রি হয়েছে সর্বনিম্ন সাড়ে তিন হাজার টাকা। সেই হিসেবে পাট বিক্রি হবে ১২০০ কোটি টাকার ওপর।
অপরদিকে প্রতি মণ পাট খড়ি বিক্রি হয়েছে গড়ে সাড়ে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। প্রতি হেক্টর জমির পাট খড়ি বিক্রি হয়েছে ৩০ হাজার টাকার ওপরে। সেই হিসেবে এ অঞ্চলের চাষিরা পাট খড়ি বিক্রি করবেন ২০০ কোটি টাকার ওপর। পাট ও পাট খড়ি বিক্রি করে ১৪০০ কোটি টাকার ওপর ঘরে তুলবে এ অঞ্চলের কৃষকরা।
পীরগাছা উপজেলার পাওটানা এলাকার পাট চাষি বজলুর রহমান ও আব্দুস ছালাম জানান, এ বছর পাটের দাম ভাল হওয়ায় তারা খুশি। আলু আবাদ করে যারা লোকসান করেছেন তারা এবার পাট আবাদ করে তা পুষিয়ে নেবেন।
ব্যবসায়ী লিটন মিয়া বলেন, গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার পাটের দাম অনেক বেশি। ফলে চাষি ও ব্যবসায়ীরা বাড়তি আয়ের মুখ দেখছেন।
রংপুরের পীরগাছা উপজেলার কল্যাণী ইউনিয়নের বুলবুল মিয়া ২ একর জমিতে পাট আবাদ করে ফলন পেয়েছেন ৪০ মণ। কাউনিয়ার চাষি আফজাল হোসেন জানান, পাট আবাদ করে তারা ২ ধরনের লাভ পাচ্ছেন। তা হলো ভালো দামে পাট বাজারে বিক্রি করা এবং পাটখড়িও বেশ চাহিদা থাকায় পাটের আঁশের সাথে সাথে তা বিক্রি করেও লাভবান হচ্ছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর অতিরিক্ত পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, এবার পাটের আবাদ ভালো হয়েছে। কৃষকরাও দাম ভাল পাচ্ছেন। পাট এবং পাটখড়ি বিক্রি করে কৃষকরা ১৪০০ কোটি টাকার বেশি ঘরে তুলবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল