এশিয়া কাপের তারিখ ও ভেন্যুর নাম আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেনি। তারপরও এশিয়ার দলগুলো মানসিকভাবে প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছে। এশিয়া কাপের আয়োজক ভারত। কিন্তু এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) নতুন নিয়ম ভারত ও পাকিস্তান যদি এশিয়া কাপের আয়োজক হয়, তাহলে টুর্নামেন্টের খেলা হবে নিরপেক্ষ ভেন্যুতে। ভারত এবারের আয়োজক। আগামী বছর টি-২০ বিশ্বকাপ। তার প্রস্তুতি হিসেবে এশিয়া কাপ হবে টি-২০ ফরম্যাটে। আসরে এশিয়ার ১০ দেশের অংশ নেওয়ার কথা। এসিসি ভেন্যুর নাম ঘোষণা না করলেও শোনা যাচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাতই পছন্দ ভারতের। টুর্নামেন্ট শুরুর সম্ভাব্য তারিখ ১০-২৮ সেপ্টেম্বর। হয়তো পেছাতেও পারে। টাইগার অধিনায়ক লিটন দাস এশিয়া কাপের প্রস্তুতি হিসেবে আরও একটি সিরিজ খেলার আগ্রহ প্রকাশ করেন। পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ শেষে মিডিয়ার মুখোমুখিতে টাইগার অধিনায়ক বলেন, ‘পাকিস্তান সিরিজ শেষ। এশিয়া কাপের আগে একটা সিরিজ হলে অবশ্যই আমাদের জন্য ভালো হয়।’ শোনা যাচ্ছে, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানকে নিয়ে একটি তিন জাতির টি-২০ টুর্নামেন্ট আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে আরব আমিরাত। ভারতের সঙ্গে আগস্টে তিনটি করে ওয়ানডে ও টি-২০ ম্যাচ খেলার সূচি ছিল। ভারত সিরিজ দুটি খেলতে বাংলাদেশে আসতে রাজি হয়নি। বাতিল হয়ে যায় শেষ মুহূর্তে। গেল ডিসেম্বর থেকে টানা টি-২০ সিরিজ খেলছেন টাইগাররা। সদ্য সমাপ্ত পাকিস্তান সিরিজ পর্যন্ত পাঁচটি সিরিজ খেলেছে লিটন বাহিনী। সব সিরিজের অধিনায়ক ছিলেন লিটন। ডিসেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন নাজমুল হোসেন শান্তর পরিবর্তে। ক্যারিবীয়দের হোয়াইটওয়াশের পর টি-২০ ক্রিকেটে দেশকে নেতৃত্ব দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেন লিটন। বিসিবিও তাকে ২০২৬ সালের টি-২০ বিশ্বকাপ পর্যন্ত অধিনায়ক মনোনীত করে। তার নেতৃত্বে মে মাসের ১৭ তারিখ থেকে দুই মাসে টানা ৪টি টি-২০ সিরিজ খেলেছেন টাইগাররা। সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে এগিয়ে থেকেও হেরে যায় ২-১ ব্যবধানে। মে-জুনে পাকিস্তানের মাটিতে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ হয় লিটন বাহিনী। টানা দুই সিরিজ হারের ধাক্কা নিয়ে জুন-জুলাইয়ে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে ‘দ্বীপরাষ্ট্র’ শ্রীলঙ্কা সফরে যান টাইগাররা। হেরে যান টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজ। দুর্দান্ত ক্রিকেট খেলে জয় পায় টি-২০ সিরিজে। ঘরের মাটিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে জেতে সিরিজ। টানা পাঁচ সিরিজের তিনটি জিতেছে লিটন বাহিনী। ১৫ ম্যাচে অধিনায়ক লিটন জিতেছেন ৮টি এবং হেরেছেন ৭টি। টানা ক্রিকেট খেলার পর এখন বিশ্রামে ক্রিকেটাররা। এশিয়া কাপের আগে কোনো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট নেই। ছুটি ক্রিকেটারদের। পরিবার নিয়ে টাইগার অধিনায়ক লিটন গেছেন মালয়েশিয়ায়। অন্য ক্রিকেটাররাও সুযোগ করে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন।
টি-২০ ক্রিকেটে পাকিস্তানকে প্রথমবারের মতো হোয়াইটওয়াশের সুবর্ণ সুযোগ ছিল টাইটারদের। প্রথম ম্যাচে রেকর্ডগড়া জয় পায় লিটন বাহিনী। সফরকারীদের ১১০ রানে গুটিয়ে ৭ উইকেটে ম্যাচ জেতে ২৭ বল আগে। পাকিস্তানের বিপক্ষে যা সবচেয়ে বেশি বল হাতে রেখে জয়ের রেকর্ড। এ ছাড়া মুস্তাফিজুর রহমান টি-২০ ক্রিকেট ইতিহাসে বাংলাদেশের পক্ষে সবচেয়ে মিতব্যয়ী বোলিংয়ের রেকর্র্ড গড়েন। তার স্পেল ছিল ৪-০-৬-২। পাকিস্তানের ১১০ রানের স্কোরটি আবার বাংলাদেশের বিপক্ষে সর্বনিম্ন। দ্বিতীয় ম্যাচে লিটন বাহিনী ৮ রানের শ্বাসরুদ্ধকর জয় পায়। ১৩৩ রান করে সফরকারীদের ১২৫ রানে গুটিয়ে দেয়। টানা দুই জয়ের পর তৃতীয় ম্যাচটির সমীকরণ দাঁড়ায় হোয়াইটওয়াশের হাতছানির। সফরকারীদের ১৭৮ রানে আটকে ব্যাটিং ব্যর্থতায় ১০৪ রানের বেশি করতে পারেননি টাইগাররা।
বাংলাদেশ সিরিজ জিতেছে ২-১ ব্যবধানে। শেষ ম্যাচ ছাড়া টাইগার বোলাররা ভালো বোলিং করেন সিরিজে। ব্যাটাররাও একেবারে খারাপ করেননি। মিরপুরের উইকেট নিয়ে সমালোচনা করেছেন পাকিস্তানের কোচ মাইক হেসন ও অধিনায়ক সালমান আগা। দুজনই বলেছেন, এমন উইকেটে খেলে এশিয়া কাপ ও টি-২০ বিশ্বকাপে ভালো করা সম্ভব নয়। টাইগার অধিনায়ক লিটন অবশ্য বলেছেন উইকেট ভালো, ‘এটা ভালো উইকেট ছিল। আগের দুই ম্যাচের চেয়ে এটা অনেক ভালো উইকেট ছিল। ব্যাটিং সহায়ক ছিল। অবশ্য আমাদের বোলিং ইউনিট খুবই ভালো করেছে।’
কিছুদিন আগে সেন্ট ভিনসেন্টে বিশ্বকাপ খেললাম একই ধরনের উইকেটে। ১৩০, ১৪০ রানও বেশি ছিল। ক্রিকেটে এমন থাকবে কিছু দিন। প্লেয়ারদের মানিয়ে নেওয়াই কাজ।’