সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে বছরের যে কোনো সময় ভোটার তালিকা প্রকাশ ও সংশোধন করার ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে আইন সংশোধন করেছে সরকার।
সব আনুষ্ঠানিকতা সেরে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার ‘ভোটার তালিকা (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করেছে। প্রতি বছর ২ জানুয়ারি খসড়া প্রকাশ করার পর ২ মার্চ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের বিধান ছিল আগে। ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে এ বছর ২০ জানুয়ারি থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করে এএমএম নাসির উদ্দিন কমিশন। জুনের মধ্যে ভোটারযোগ্য আরও সাড়ে ৪৪ লাখ ভোটারের তথ্য নিবন্ধন করে। কিন্তু এ হালনাগাদ তালিকা প্রকাশ নিয়ে বিপত্তি বাধে। এমন পরিস্থিতিতে বছরের যে কোনো সময় ইসি যেন তালিকা প্রকাশ করতে পারে এমন বিধান সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। গত ১৭ জুলাই উপদেষ্টা পরিষদ বিধানে সংশোধন এনে ভোটার তালিকা আইনে খসড়া অধ্যাদেশ অনুমোদন করে। তাতে, তফসিলের আগে ভোটারদের তালিকাভুক্ত করে তা প্রকাশের বিধান যুক্ত করা হয়। বৃহস্পতিবার এ সংশোধন অধ্যাদেশ জারি হলো। তফসিল ঘোষণার আগে নির্বাচন কমিশন চাইলে বছরের যেকোনো সময় নতুন ভোটার অন্তর্ভুক্ত এবং তালিকা প্রকাশ করার ক্ষমতা পেল ইসি।
২০০৯ সালের ৬ নং আইনের ধারা ৩-এর সংশোধন সংক্রান্ত অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, ভোটার তালিকা আইন, ২০০৯-এর ধারা ৩-এর দফা (জ)-এ ‘জানুয়ারি মাসের পহেলা তারিখ’ শব্দগুলোর পর ‘কমিশন কর্তৃক ঘোষিত অন্য কোনো তারিখ’ শব্দগুলো সন্নিবেশিত হবে। এ ছাড়া ২০০৯ সালের ৬ নং আইনের ধারা ১১ সংশোধন করে নতুন উপ-ধারা (১) যোগ করা হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, ‘(১) কম্পিউটার ডাটাবেজে সংরক্ষিত বিদ্যমান সব ভোটার তালিকা, প্রতি বছর ২ জানুয়ারি থেকে ২ মার্চ পর্যন্ত অথবা তফসিল ঘোষণার আগে ধারা ৩-এর দফা (জ)-এর অধীন ঘোষিত সময়সীমার মধ্যে, নির্ধারিত পদ্ধতিতে হালনাগাদ করা হবে। (ক) যাদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হয়েছে কিন্তু ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হয়নি, তাদের ভোটার তালিকাভুক্ত করা; (খ) যেসব ভোটার মৃত্যুবরণ করেছেন বা অযোগ্য হয়েছেন, তাদের নাম কর্তন করা এবং (গ) যারা এলাকার পরিবর্তন করেছেন, তাদের নাম আগের তালিকা থেকে কেটে নতুন এলাকার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা। তবে শর্ত থাকে যে, উপরের সময়সীমায় হালনাগাদ না হলেও ভোটার তালিকার বৈধতা বা ধারাবাহিকতা নষ্ট হবে না।’ ভোটার তালিকা আইন, ২০০৯-এর ধারা (জ)-এ বলা ছিল, ‘যোগ্যতা অর্জনের তারিখ’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রতিটি ভোটার তালিকা প্রণয়ন, সংশোধন বা হালনাগাদের ক্ষেত্রে সেই বছরের ১ জানুয়ারি। এ বিধান অনুযায়ী, ১ জানুয়ারির পরে যারা ১৮ বছর পূর্ণ করতেন তারা ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারতেন না।