ভারতশাসিত কাশ্মীরের পাহেলগাঁওয়ে বন্দুকধারীদের গুলিতে ২৬ পর্যটকের নিহত হওয়ার ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে সীমান্তে ভারতীয় বাহিনীর নিরাপত্তা ব্যবস্থার গাফিলতি নিয়ে। ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার ব্যর্থতা নিয়েও চলছে সমালোচনা।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় বৈঠকে বসেছিল ভারতের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো। এসময় কেন্দ্রীয় সরকারকে কড়া প্রশ্নের মুখে ফেলে বিরোধীরা।
ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নেতৃত্বে আয়োজিত এই বৈঠকে বিরোধীদের মূল প্রশ্ন ছিল-পাহেলগাঁওয়ের কাছে বৈসারনে হামলার সময় কেন কোনো নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন ছিল না?
বন্দুকধারীদের গুলিতে নিহতদের তালিকায় চোখ রাখলে দেখা যাবে, কাশ্মীর থেকে কেরালা, গুজরাট থেকে পশ্চিমবঙ্গ আর আসাম-বহু রাজ্যেরই মানুষের নাম আছে সেখানে।
পর্যটকদের ওপরে এই হামলায় ভারতের অন্যান্য অঞ্চলের সাধারণ মানুষের মতোই ক্ষেপে উঠেছেন কাশ্মীরিরাও-কারণ এই পর্যটকরাই যে কাশ্মীরের সাধারণ মানুষের একটা বড় অংশের রুজি-রুটির অংশ!
সামাজিক মাধ্যমে ভারতের মানুষের ক্ষোভের প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে, তবে একই সঙ্গে অনেকেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন যে হামলার সময়ে নিরাপত্তা বাহিনী কোথায় ছিল!
দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস সংবাদপত্রের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে যে প্রায় ২০ মিনিট হামলা চলার পরে যখন নিরাপত্তা বাহিনী সেখানে পৌঁছায়, ততক্ষণে বন্দুকধারীরা পালিয়ে গেছে।
ওই হামলায় বেঁচে যাওয়া একাধিক প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনায় এই একই তথ্য উঠে এসেছে।
মহারাষ্ট্রের পুণের বাসিন্দা আশাবরী সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, হামলার সময় তিনি তার বাবা-মা ও আত্মীয়দের সঙ্গে ছিলেন। ওই হামলায় তার বাবা ও এক আত্মীয় নিহত হয়েছেন।
পিটিআই আশাবরীকে উদ্ধৃত করে লিখেছে, ‘আমাদের সাহায্য করার জন্য সেখানে কেউ ছিল না। আমাদের যে চালকরা আমাদের ওখানে নিয়ে গিয়েছিল, তারাই একমাত্র আমাদের সাহায্য করেছিলেন।’
তিনি দাবি করেন, হামলার ২০ মিনিট পর নিরাপত্তা বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল কেজেএস ধিলোঁ ভারতীয় সেনাবাহিনীর শ্রীনগর-ভিত্তিক ১৫ কোরের প্রাক্তন কম্যান্ডার।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আপাতত আমি এটাই বলব, হ্যাঁ, কাশ্মীরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গতিশীল বা ডায়নামিক পদ্ধতিতে কাজ করে। সেটার নিয়মিত পর্যালোচনা করা হয়। সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট থেকে দেখেছি, বৈসারন উপত্যকায় নিরাপত্তা বাহিনীর কোনো উপস্থিতি ছিল না। যে এলাকায় এত পর্যটকদের ভিড়, সেখানে নিরাপত্তা বাহিনী থাকা উচিত ছিল।’
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত