তাওহিদ গ্রুদয়কে ঘিরে ক্রিকেট অঙ্গন বেশ উত্তপ্ত। এর পেছনে কারণও রয়েছে। ১২ এপ্রিল মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে বসুন্ধরা গ্রুপ ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে আবাহনী ও মোহামেডান গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল। সেখানেই আম্পায়ারের এক সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেননি গ্রুদয়। তিনি রাগ সামাল না দিতে পেরে আম্পায়ারের সঙ্গে তর্কে জড়ান। ম্যাচ শেষে জরিমানাসহ তাকে এক ম্যাচ নিষিদ্ধ করা হয়। গণমাধ্যমের সামনে এসেও আম্পায়ারদের সমালোচনা করেন গ্রুদয়। তাতে শাস্তি বাড়িয়ে আরও এক ম্যাচ নিষিদ্ধের কথা জানানো হয়। সঙ্গে ৮০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়। আম্পায়ারের সঙ্গে এমন আচরণে শাস্তি পাওয়াটা বাধ্যতামূলক। পরিচিত ক্রিকেটার হওয়ার পরও গ্রুদয়কে বাইরে রাখা হয়।
নিয়ম অনুযায়ী সুপার লিগে প্রথম দুই ম্যাচে মোহামেডানের অধিনায়ক গ্রুদয় থাকবেন মাঠের বাইরে। প্রথম ম্যাচে লেজেন্ডস অব রূপগঞ্জের বিপক্ষে দেখা যায়নি। তবে অগ্রণী ব্যাংকের বিপক্ষে খেলতে নামেন। যার দুই ম্যাচ খেলার কথা না অথচ তাকেই এক ম্যাচ দেখা গেল। এ নিয়ে হইচই বয়ে যায়। এখানে প্রকাশ্যে অভিযোগ ওঠে বিসিবির পক্ষপাতিত্বের। মোহামেডানের চাপে তারা অবৈধ পথে হেঁটেছে। যাক, শেষ পর্যন্ত সমালোচনার ঝড়ে গ্রুদয়কে দুই ম্যাচই নিষিদ্ধ থাকতে হচ্ছে। আগামীকাল তিনি গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের বিপক্ষে খেলতে পারবেন না। প্রশ্ন হচ্ছে, এখানে নিয়ম যে ভাঙা হলো এজন্য কি কোনো শাস্তি হবে না?
সত্যি বলতে কি, গ্রুদয় আম্পায়ারের সঙ্গে যা করেছেন তা নিন্দনীয়। প্রশ্ন ওঠে, এ ধরনের ঘটনা তো ঘরোয়া ক্রিকেটে অহরহ ঘটেছে। তখন কেন অ্যাম্পায়ার্স ও টেকনিক্যাল কমিটি নীরব ছিল? তারা ঘুমাচ্ছিল নাকি ভয়ে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি। এখানে কোনো কিছুর বিনিময়ে ম্যানেজেরও কথা উঠে আসে। ঘরোয়া বিশেষ করে ঢাকা প্রথম বিভাগ, বর্তমান প্রিমিয়ার লিগ ঘিরে বিতর্ক নতুন নয়। গত ১৫ বা ১৬ বছর (নাজমুল হাসান পাপন সভাপতি থাকা অবস্থায়) যা ঘটেছে তা তো নিন্দারও ভাষা নেই। নানান অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে জনপ্রিয় আসরকে শেষ করে দিয়েছে। একটি বিশেষ দলের সাফল্যের খতিয়ান ভারী করতে টেবিল ও মাঠে অবৈধ পথ বেছে নিয়েছে। ওয়াইড বল তার পরও এলবিডব্লিউর আঙুল তোলা হয়েছে বিশেষ দলকে জেতাতে।
অনিয়মের শেষ ছিল না পাপনের আমলে। তখন কেন কেউ মুখ খোলেননি? নাকি জেগে ঘুমাচ্ছিলেন? এখন যারা গ্রুদয়ের আচরণে ক্ষুব্ধ তখন তারা কী করেছেন? এখন এত বিপ্লবী হওয়ার কারণ কী? খারাপ আচরণে উৎসাহ তো তখনই শুরু। বিশেষ এক দলের ক্রিকেটাররা খারাপ আচরণের পরও আম্পায়ার বা বিসিবি নীরব থেকেছে। এতে অন্যরা তো সাহস পাবেই। অতীতের কর্মকান্ডগুলো অবশ্যই তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে। না হলে বিতর্ক থামবে না। তখন যেমন এক বিশেষ দল ছিল, এখন আবার কেউ সেই সুবিধা নিতে চাইবে। অতীত আর বর্তমান সব অন্যায় প্রতিহত করতে হবে বিসিবিকে।