গুম ও খুনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তাদের বাহিনীর হেফাজতে নেওয়ার পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, একটি স্বচ্ছ বিচারপ্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্দিষ্ট অপরাধীরা যথাযথ শাস্তির মুখোমুখি হবেন। গতকাল নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে ডা. শফিকুর রহমান এই মন্তব্য করেন।
ডা. শফিকুর রহমান তার পোস্টে বলেন, গুম ও খুনের সঙ্গে জড়িত সেনাবাহিনীর কতিপয় কর্মকর্তাকে বিচারের আওতায় আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে নিয়ে বাংলাদেশের জনগণ গর্বিত থাকতে চান।
পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন, এই বাহিনীর কতিপয় সদস্য দেশের বিদ্যমান আইন ও মানবাধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শনে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছিলেন। জামায়াত আমির অভিযোগ করেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের প্ররোচনায় প্রতিপক্ষ নিধনের এজেন্ডা বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ছিলেন অন্ধ সহযোগী। ফলে গুম এবং খুনের একটি ভীতিকর পরিবেশ দেশে সৃষ্টি হয়েছিল, যা একটি জাতির জন্য খুবই দুর্ভাগ্যের বিষয়।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, সুনির্দিষ্ট কয়েকজন ব্যক্তির অপরাধের জন্য পুরো সামরিক প্রতিষ্ঠানকে কলঙ্কিত হতে দেওয়া যায় না এবং অপরাধের দায় কেবল সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ওপরই বর্তাবে। তিনি জানান, ইতোমধ্যে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এই বিচারপ্রক্রিয়াকে সহায়তা করার স্পষ্ট ঘোষণা দেওয়া হয়েছে এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বাহিনীর হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। আমরা সেনাবাহিনীর এ উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। জামায়াত আমির তার পোস্টে আশা প্রকাশ করেন, কারও ওপর কোনো অবিচার চাপিয়ে দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, স্বচ্ছ বিচারপ্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্দিষ্ট অপরাধীরা যথাযথ শাস্তির মুখোমুখি হবেন। এর ফলে যেমন অতীতের দায় মুছে যাবে, তেমনি ভবিষ্যতে কেউ নিজের পেশা বা পরিচয়কে কাজে লাগিয়ে জনগণের জানমালের ক্ষতি সাধন থেকে বিরত থাকতে বাধ্য হবেন।
এদিকে গতকাল জামায়াতের বসুন্ধরা কার্যালয়ে আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে ঢাকার জার্মানির নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ড. রুডিগার লোটজ সাক্ষাৎ করেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন আনজা কারস্টেন এবং পলিটিক্যাল ও প্রেস অফিসার শারলিনা নুজহাত কবির। জামায়াত আমির জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্যভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে জার্মানির সহযোগিতা ও কারিগরি সহায়তা চান। একই সঙ্গে তিনি বাংলাদেশের নারী সমাজের অধিকার সুরক্ষা, কর্মক্ষেত্রে দক্ষতা বৃদ্ধি এবং সার্বিক উন্নয়নে জার্মানির অব্যাহত সমর্থনের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।