রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে শেষ দিনের মনোনয়ন উত্তোলন ঘিরে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এতে অন্তত আটজন আহত হয়েছেন। প্রথম বর্ষের ভোটাধিকারের দাবিতে ছাত্রদল মনোনয়ন উত্তোলনে বাধা দিলে এ সংঘর্ষ বাধে। গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ে সকাল ১০টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত এ ঘটনা ঘটে।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, আমরা সুশৃঙ্খলভাবে নির্বাচন দিতে চাই। বিশৃঙ্খলা এ কার্যক্রমকে ব্যাহত করবে। এটা কারও কাছে কাম্য নয়। তফসিল অনুসারে, ৩১ আগস্ট বিকাল ৫টা পর্যন্ত রাকসুর কোষাধ্যক্ষের কার্যালয়ে মনোনয়ন বিতরণ হয়। তবে এদিন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে প্রথম বর্ষের ভোটাধিকার দাবি তুলে কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয় ছাত্রদল। একপর্যায়ে টেবিল-চেয়ার ছুড়ে মনোনয়ন উত্তোলন বন্ধ করেন এবং কার্যালয় তালা দেন তারা। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন পদপ্রার্থী ও সাবেক সমন্বয়কসহ রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন। একপর্যায়ে উভয়ের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের কমপক্ষে আটজন আহত হন এবং মনোনয়ন উত্তোলন ৪ ঘণ্টা বন্ধ থাকে। বেলা ২টার দিকে মনোনয়ন উত্তোলন কার্যক্রম চালু হয়। তবে দাবি আদায়ে ফের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা।
মেডিকেল সেন্টারের পরিচালক ডা. লিপি জানান, শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত নিয়ে আটজন আসেন। প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে সবাই চলে গেছেন। শাখা শিবিরের সভাপতি মোস্তাকুর রহমান বলেন, প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা দীর্ঘ ৩৫ বছর পর রাকসু পেয়েছে। এতে তাদের ভোটাধিকার থাকা উচিত। কিন্তু ছাত্রদল এটাকে পুঁজি করে নির্বাচন বানচালেন ষড়যন্ত্র করছে। আমরা এটার তীব্র প্রতিবাদ জানাই। তাদের এ ষড়যন্ত্র সফল হতে দেওয়া হবে না।
শাখা ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, প্রথম বর্ষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিলাম। এটা তাদের ন্যায্য অধিকার। সেই দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন ঘোষণা দিই। সেই ধারাবাহিক আন্দোলন চলাকালে শিবির আমাদের ওপর আক্রমণ করে। আজকের ঘটনার সম্পূর্ণ দায় এই প্রশাসনের। এই পাকিস্তানপন্থি নির্বাচন কমিশনার ও প্রশাসনের পদত্যাগ দাবি করছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। এ ব্যাপারে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. এফ নজরুল ইসলাম বলেন, নির্বাচনটা শিক্ষার্থীদের। আমরা শিক্ষকরা সহায়তা করছি। কিন্তু তারা যদি বাধার সৃষ্টি করে, পরস্পর সংঘাতে যায়, তাহলে তো নির্বাচন সম্ভব নয়। সুতরাং তারা নির্বাচন চায় কি না সেটা তাদেরই ঠিক করতে হবে। ২৫ সেপ্টেম্বরই নির্বাচন দিতে চাই। তবে তারা সহযোগিতা না করলে আর সম্ভব নয়।