বরেণ্য লেখক হুমায়ুন আহমেদ এর ৭৭তম জন্মদিনে নিজ জেলা নেত্রকোনায় হিমু উৎসবের আয়োজন করেছে তরুণ পাঠক ভক্তরা। প্রতিবারের ন্যায় এবারো দিবসটিতে তরুণরা হিমু-রূপা সেজে বিভিন্ন বয়সের কবি, লেখক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবি, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের সাথে নিয়ে হিমু উৎসবের প্রথমার্ধে শোভাযাত্রা বের করে। পরে কেক কাটা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে তারুণ্য নির্ভর সামাজিক সংগঠন ‘হিমু পাঠক আড্ডা’।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সকালে ১১ টায় স্থানীয় শহীদ মিনার থেকে হলুদ পাঞ্জাবিতে হিমু আর নীল শাড়িতে রূপা সেজে লেখকের নাটক-সিনেমায় ব্যবহৃত গানের সাথে নেচে গেয়ে মোক্তারপাড়া মুক্তমঞ্চ পর্যন্ত হেঁটে হিমু-রূপাদের নিয়ে কেক কাটেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামান, পুলিশ সুপার মির্জা সায়েম মাহমুদ, এডিএম সুখময় সরকার ও শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসার আতিকুর রহমান।
পরে জেলা শিল্পকলা একাডেমির নজরুল মঞ্চে হিমু পাঠক আড্ডার আয়োজনে আড্ডায় আড্ডায় লেখকের তৈরি নাটক সিনেমায় ব্যবহৃত কালজয়ী গান ও নৃত্য পরিবেশিত হয়। আড্ডায় আড্ডায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে লেখক সম্পর্কে আলোচনা করেন স্থানীয় কবি-লেখক-সাহিত্যিকরা।
মূলত প্রতিবছর নতুন প্রজন্মের মাঝে হুমায়ুন আহমেদ এর সাহিত্য-সংস্কৃতি আনন্দের ছলে এবং লেখকের আকর্ষণীয় কাল্পনিক চরিত্রের রূপায়নের মাধ্যমে তুলে ধরাই লক্ষ্য।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামান বলেন, ‘হুমায়ুন আহমেদ ছিলেন বাংলা সাহিত্যের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তিনি বাংলা সাহিত্যের পাশাপাশি নাটক ও চলচ্চিত্র নির্মাণ করে দেশের মানুষের হৃদয় মন জয় করেছেন। তার সাহিত্য কর্মে হিমু রূপা চরিত্র সৃষ্টি করে নতুন প্রজন্মকে ব্যাপকভাবে আকৃষ্ট করেছিলেন। ফলে নতুন প্রজন্মের ছেলে-মেয়েদের মাঝে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছিলেন।’
তাঁর সাহিত্যকর্ম নতুন প্রজন্মের মধ্যে যু গযুগ ধরে মানবিকতা, কল্পনাশক্তি ও জীবনের সৌন্দর্য অনুধাবনের অনুপ্রেরণা জোগাবে। পরে গান, নাচ ও আড্ডায় হুমায়ুন আহমেদকে স্মরণ করে মনেজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
এছাড়াও লেখকের জন্মস্থান নানার বাড়ি জেলার মোহনগঞ্জের শেখ বাড়িতে ও লেখকের পৈত্রিক ভিটা কেন্দুয়ার কুতুবপুরে লেখক প্রতিষ্ঠিত শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপিঠে দোয়া মাহফিল করা হয়।
উল্লেখ্য, দেশ বরেণ্য লেখক হুমায়ূন আহমেদ ১৯৪৮ সনের ১৩ নভেম্বর মায়ের বড় সন্তান হিসেবে জন্মগ্রহণ করেন নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলা পৌর এলাকার শেখ বাড়ি নামক নানারবাড়িতে। তিনি ২০১২ সনের ১৯ জুলাই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আমেরিকায়। লেখক পৈত্রিক ভিটা কেন্দুয়ায় স্থাপন করে গেছেন শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠ নামের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠিান।
বিডি-প্রতিদিন/জামশেদ