ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর ক্রমাগত হামলার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে ধর্মীয় স্বাধীনতার পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে, এমনটাই বলা হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সংস্থা কমিশন অন ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডমের ২০২৫ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে।
এতে বলা হয়েছে জুলাই গণ অভ্যুত্থানে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির পর হিন্দু ধর্মাবলম্বী এবং তাদের মন্দিরের ওপর হামলা বেড়েছে বলে তাদের সংগঠনগুলো দাবি করেছে। যদিও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার জানিয়েছে, ইউএসসিআইআরএফ-এর প্রতিবেদনে বাংলাদেশের ধর্মীয় স্বাধীনতার পরিস্থিতি নিয়ে যে তথ্য দেওয়া হয়েছে, তা একেবারেই সত্য নয়। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে অপসারণের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে, এর পক্ষে শক্ত কোনো প্রমাণ নেই। তবে মার্কিন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংখ্যালঘুদের সুরক্ষায় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবে তাদের অবস্থা আরও শোচনীয় হয়েছে। যদিও মার্কিন ওই প্রতিবেদনে সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়নের জন্য ‘বিশেষভাবে উদ্বেগের’ অথবা ‘নজরদারিতে রাখা’ দেশগুলোর যে তালিকা করা হয়েছে, যেসব দেশের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি, ভিসা কড়াকড়ি বা সহায়তা বন্ধের মতো পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে, সেই তালিকায় বাংলাদেশ পড়েনি। বিশেষ উদ্বেগের তালিকায় থাকা দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে চীন, ভারত, পাকিস্তান, মিয়ানমার, আফগানিস্তান, ভিয়েতনাম, সৌদি আরব, রাশিয়া, কিউবা,, ইরিত্রিয়া, নিকারাগুয়া, নাইজেরিয়া, উত্তর কোরিয়া, তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান ও ইরান। অন্যদিকে সংখ্যালঘু নির্যাতনের কারণে বিশেষভাবে যেসব দেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নজর রাখা উচিত বলে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তার মধ্যে আছে আলজেরিয়া, আজারবাইজান, মিসর, ইন্দোনেশিয়া, ইরাক, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, মালয়েশিয়া, শ্রীলঙ্কা, সিরিয়া, উজবেকিস্তান ও তুরস্ক। মার্কিন প্রতিবেদনে ভারত, পাকিস্তান বা বার্মার মতো উদ্বেগের মূল তালিকায় থাকা দেশগুলোয় সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি, ভিসা কড়াকড়ি আরোপ, সহায়তা বন্ধের মতো জোরালো পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। ভারতে সংখ্যালঘু নির্যাতনে উৎসাহ দেওয়া, সহায়তার মতো অভিযোগে গুপ্তচর সংস্থা ‘র’ এবং বিকাশ ইয়াদবের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের মতো পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তানের সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও একই রকম পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তবে এসব সুপারিশ বাস্তবায়ন করা মার্কিন সরকারের জন্য বাধ্যতামূলক নয়।
