ছাত্র-জনতার জুলাই গণ আন্দোলনের লক্ষ্য অর্জনে প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয় ব্যাপকভিত্তিক সংস্কারের। বৈষম্য, দুর্নীতি, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত মানবিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে অনিবার্যভাবে অত্যাবশ্যক
হয়ে ওঠে বিভিন্ন খাত সংস্কার। কারণ দীর্ঘ দেড় দশকের স্বৈরশাসনে লাগামহীন অনাচার-দুরাচারে রাষ্ট্রের সব গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানই ভেঙে ছত্রখান হয়ে পড়েছিল। সেগুলো পুনর্গঠনে, অন্তর্বর্তী সরকার ১১টি সংস্কার কমিশন গঠন করে। ইতোমধ্যে ছয়টি কমিশন তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্তে এসব প্রতিবেদন থেকে অবিলম্বে বাস্তবায়নযোগ্য প্রস্তাবগুলো চিহ্নিত করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়েছে। সংস্কার সুপারিশ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে মতামত নেওয়ার পাশাপাশি ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ চলার মধ্যেই সরকার এ উদ্যোগ নিয়েছে। এমন সব প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জরুরি ১১১টি সংস্কার সুপারিশ প্রশাসনিকভাবেই বাস্তবায়ন করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ যেসব সংস্কারে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা নেই, সেগুলো মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। আশু বাস্তবায়নযোগ্য প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নে সরকারের নেওয়া উদ্যোগ ইতিবাচক। ইতোমধ্যে এসব সুপারিশ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেগুলো নিয়ে বর্তমানে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো কাজ করছে। এগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন হলে, তা নির্বাচন ত্বরান্বিত করার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে। সরকার চাইলে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারগুলো অধ্যাদেশ জারি করে, প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতেই পারে। কারণ এর মাধ্যমে নির্বাচন যতটা সম্ভব দ্রুত করার কাজ এগোবে। মূলত নির্বাচিত সরকারের হাতে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব তুলে দিয়ে গণতন্ত্রে উত্তরণই সবার প্রত্যাশা। এবং সেটা জরুরি। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক এবং দেশে-বিদেশে গ্রাহ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। আর তার মাধ্যমে সৎ, যোগ্য ও দেশপ্রেমী, জনসম্পৃক্ত মানুষ জনরায় নিয়ে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিক এটাই কামনা। এ প্রক্রিয়া দ্রুততর হোক। জাতি তারই অপেক্ষায়।