বিশ্ব বাজারে পোশাক, চামড়া, জুতা, প্লাস্টিক ও প্রকৌশলসহ বিভিন্ন খাতে রফতানি বাড়াতে এবং বাজার সম্প্রসারণে প্রযুক্তির বিকল্প নেই। ক্রেতা বিক্রেতাদের নেটওয়ার্কিংয়ের সকল কিছুই এখন অনলাইনে হয়। ভিয়েতনাম, ভারত ও চীনসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে প্রযুক্তি ব্যবহারের বিকল্প নেই।
আজ রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে মার্কেট ইন্টেলিজেন্স প্ল্যাটফর্ম (এমআইপি) এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান মার্কেট ইন্টেলিজেন্স প্ল্যাটফর্ম (এমআইপি) নতুন প্লাটফর্ম উদ্বোধন করেন। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ব ব্যাংকের সিনিয়র প্রাইভেট সেক্টর স্পেশালিস্ট ও এক্সপোর্ট কমপেটিটিভনেস ফর জব (ইসি৪জে) প্রজেক্টের টাস্ক টিম লিডার হোসনা ফেরদৌস সুমি, বাংলাদেশ প্লাস্টিক গুড্স ম্যানুফ্যাকচারারস অ্যান্ড এক্সপোটার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিপিজিএমইএ) সভাপতি শামীম আহমেদ, বাংলাদেশ বাইসাইকেল অ্যান্ড পার্টস ম্যানুফ্যাকচারারস অ্যান্ড এক্সপোটার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিবিপিএমইএ) সভাপতি মোহাম্মদ মুশতাক আহমেদ তানভীর।
অনুষ্ঠানের শুরুতে এই সংক্রান্ত বিষয়ে মূল বক্তব্য তুলে ধরেন মার্কেট ইন্টেলিজেন্স প্ল্যাটফর্মের প্রধান পরামর্শক ও লাইটক্যাসেল পার্টনার্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) বিজন ইসলাম। এতে মূল উপস্থাপনা তুলে ধরেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও ইসি৪জে প্রজেক্টের প্রকল্প পরিচালক মো. আব্দুর রহিম খান। অনুষ্ঠানের শেষে ’বাংলাদেশে রফতানির বৈচিত্র্যকরণ’ শীর্ষক এক প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। প্যানেল আলোচনায় সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতা, ডিজিটাল পদ্ধতি এবং নীতি সহায়তার মাধ্যমে দেশের রফতানি ভিত্তি সম্প্রসারণের কৌশলগত উপায় নিয়ে আলোচনা করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, মার্কেট ইন্টেলিজেন্স প্ল্যাটফর্ম (এমআইপি) চালুর মাধ্যমে আমরা আমাদের রফতানিকারকদের বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের সাথে জড়িতদের কার্যকর ও নির্ভরযোগ্য তথ্য দিচ্ছি। এতে তারা বিশ্ব বাজারে আত্মবিশ্বাসের সাথে প্রতিযোগিতা করতে পারবে। ফলে রফতানির বাজার সম্প্রসারণ হবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও ইসি৪জে প্রজেক্টের প্রকল্প পরিচালক আব্দুর রহিম খান বলেন, নতুন এই প্লাটফর্মটি রফতানিকারকদের জন্য এটি একটি ‘ওয়ান-স্টপ সার্ভিস’। যার মাধ্যমে সঠিক ও বাস্তব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা সহজ হবে। বিশ্বে প্রতিযোগিতা করার জন্যে আমাদের নিজ দেশে সক্ষমতা তৈরী করতে হবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ লক্ষ্যেই কাজ করছে।
প্রজেক্টের টাস্ক টিম লিডার হোসনা ফেরদৌস সুমি বলেন, আমাদের লক্ষ্য হলো-এমন একটি পরিবেশ তৈরি করা, যেখানে রফতানিকারকরা অনুমান করে কোন সিদ্ধান্ত নিবে না। বরং সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে বাজারে তাদের নতুন নতুন পণ্য নিয়ে আসবে।
বিপিজিএমইএ সভাপতি শামীম আহমেদ বলেন, পোশাক শিল্পের বাইরেও বেশকিছু পণ্যে বাংলাদেশের রফতানি সম্ভাবনা উজ্জ্বল। চামড়া, প্লাস্টিক এবং প্রকৌশলের মতো খাতগুলোকে বিকশিত করার জন্য মন্ত্রণালয় বিশেষভাবে কাজ করছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে, বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতায় ইসি৪জে প্রকল্পের কার্যক্রম হিসেবে এই মার্কেট ইন্টেলিজেন্স প্ল্যাটফর্ম (এমআইপি) উদ্বোধন করা হয়। এ ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে রপ্তানিকারক বা বিক্রেতারা ক্রেতাদের যাবতীয় তথ্য সহজে পাবেন। বিক্রেতারাও এর মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট ক্রেতা খুঁজে পাবেন। এতে আমদানি-রফতানি সহজ হবে। এর পাশাপাশি উভয়ের মধ্যে সম্পর্কের নতুন সেতুবন্ধন গড়ে উঠবে। দেশের উদ্যোক্তা, শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীরা নতুন ক্রেতা খুঁজে পাবেন। ফলে দেশের রপ্তানিমূখী খাতে বিপুল সম্ভাবনা তৈরি হবে। তরুণদের জন্য নতুন কাজের সুযোগ বাড়বে।
রফতানি বৈচিত্র্যকরণ ও চাকরির সুযোগ তৈরিকে গুরুত্ব দিয়ে ’ইসি৪জে’ নামে এই প্রকল্পটি বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি উদ্যোগ। ৮ বছর মেয়াদী এই প্রকল্পটি গত ২০১৭ সাল থেকে চালু হয়েছে। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, জুতা, প্লাস্টিক এবং প্রকৌশল-এই চারটি ক্ষেত্রে রফতানি বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত