ইছামতি নদীতে স্থানীয় উদ্যোগে নির্মিত বাঁশের সাঁকোটি পানির স্রোত আর কচুরিপানার চাপে ভেঙে পড়ে যাওয়ায় শত শত মানুষের চলাচলে চরম দুর্ভোগ ও ভোগান্তিতে পড়েছে।
দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে ইছামতি নদীর হেদলের ঘাটে চলাচলের জন্য ওই বাঁশের সাঁকোটি ভেঙে নদীতে পড়ে যাওয়ায় দুর্ভোগ ও চরম ভোগান্তিতে পড়েছে মানুষ। এ দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পেতে জরুরি ভিত্তিতে ভাঙা বাঁশের সাঁকোটি দ্রুত সংস্কারের দাবি করেছেন নদীর দুই পাড়ের বাসিন্দারা। অথচ এ সাঁকো দিয়েই এলাকার বেকিপুল বাজার, কিষ্টহরি বাজার, চম্পাতলী বাজার, বিন্যাকুড়ি হাট, তারকসাহার হাট, মডেল স্কুল, ইছামতি ডিগ্রি কলেজ, ইছামতি মহিলা ডিগ্রি কলেজ, রানীরবন্দর মহিলা কলেজ, রানীরবন্দর হাট, রানীরবন্দর সুইহারি বাজারে প্রতিদিন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ব্যাংকে লেনদেন, বাজার-ঘাটসহ প্রতিটি কাজের জন্য চলাচল করতে হয়। তাদের ইছামতি নদীর এ বাঁশের সাঁকো দিয়েই চলাচল করতে হয়।
স্থানীয়রা জানায়, তারক সাহার হাটের সন্নিকটে এ সাঁকোটির পূর্বে উপজেলার আলোকডিহি ইউনিয়নের মধ্য আলোকডিহি এবং পশ্চিম প্রান্তে সাতনালা ইউনিয়নের জোত সাতনালা গ্রাম রয়েছে। এ দুই ইউনিয়নের মাঝে ইছামতি নদী। নদীর দুইপাড়ের শত শত মানুষের যোগাযোগে এ নদীই বাঁধা। এ বাঁধা দূর করতে গ্রামবাসী নিজেরাই স্থানীয়ভাবে বাঁশ সংগ্রহ ও অর্থ তুলে স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মাণ করেন এ বাঁশের সাঁকো। নদীর দুইপাড়ের মানুষের যোগাযোগের ভরসা ছিল এ সাঁকোটি। চলতি বর্ষা মৌসুমে নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কচুরিপানা আটকে এবং স্রোতের তোড়ে অন্তত আড়াই শ' ফুটের বাঁশের সাঁকোটি ভেঙে নদীতে পড়ে যায়। এতে নদীর দুইপাড়ের মানুষের যাতায়াত সুবিধা বিঘ্নিত হওয়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এদিকে, সাঁকোর অভাবে মানুষকে প্রায় দুই কিলোমিটার পথ ঘুরে কলেজ মোড় হয়ে ঘাটের পাড়ের সেতু দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। অথচ এ দুই ইউনিয়নের সংযোগস্থল মাত্র পাঁচ মিনিটের পথ বাঁশের সাঁকো পার হলেই তারকসাহার হাটসহ আলোকডিহি ইউনিয়নসহ সাতনালা ইউনিয়ন পরিষদে সহজেই যাতায়াত করা যায়।
হেদলের ঘাটে মকবুল হোসেন (৫৫), রহিদাস রায় (৫৮), পুলিন চন্দ্র রায় (৫০), সাতনালা ইউপি সদস্য আজিজার রহমানসহ (৫৮) কয়েকজন জানান, চলতি বর্ষা মৌসুমে কচুরিপানার সঙ্গে স্রোতের অতিরিক্ত চাপে সাঁকোটি ভেঙে যায়। বাঁশের সাঁকোটি ভেঙে যাওয়ায় নদীর দুইপাড়ের বাসিন্দারা কেউ নদী সাঁতরিয়ে এবং অনেককে কলার ভেলা দিয়েও পারাপার করতে দেখা গেছে।
চিরিরবন্দরের সাতনালা ইউপি চেয়ারম্যান মো. এনামুল হক শাহ বলেন, নদীতে পানি বৃদ্ধি ও উজান থেকে আসা কচুরিপানা এসে নদীর ওই স্থানে থাকা বাঁশের সাঁকোতে বাঁধাগ্রস্ত হয়। কচুরিপানার সঙ্গে স্রোতের অতিরিক্ত চাপে সাঁকোটি ভেঙে যায়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ফাতেহা তুজ জোহরা ক্ষতিগ্রস্ত সাঁকোর স্থান পরিদর্শন করেছেন। উনার দিকনির্দেশনা মোতাবেক দ্রুত সময়ের মধ্যেই সাঁকোটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল