দক্ষিণ কোরিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে ৫০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী। দেশটির কঠিনতম এই পরীক্ষায় শিক্ষার্থী যেন সময়মতো পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছাতে পারে তা নিশ্চিত করতে বিশেষ ব্যবস্থা নেয় সেখানকার পুলিশ। এমনকি পরীক্ষার সময় যেন শব্দ বিরক্তির পর্যায়ে না পৌঁছায় সেজন্য আধঘণ্টার জন্য সব ধরনের বিমান চলাচল বন্ধ রাখা হয়।
বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ৫ মিনিট থেকে ১টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত ইনচনসহ সব বিমানবন্দরে বিমান ওঠানামা বন্ধ থাকে। ইংরেজি পরীক্ষার লিসনিং অংশ চলার সময় যেন আকাশে কোনো শব্দ না হয় সেটাই ছিল প্রধান লক্ষ্য। এতে ১৪০টি ফ্লাইটের সময়সূচি বদলানো হয়। যার মধ্যে ৬৫টি আন্তর্জাতিক ফ্লাইটও ছিল।
ফ্লাইট ট্র্যাকার দেখায়, অনেক বিমান বিমানবন্দরের কাছাকাছি আকাশে চক্কর দিচ্ছিল। কারণ পরিবহন মন্ত্রণালয় বিমানগুলোর জন্য কিছু নিয়ম বেঁধে দেওয়ায় সেগুলো ৩,০০০ মিটারের নিচে নামতে পারছিল না।
এছাড়া, শিক্ষার্থীদের ভর্তি পরীক্ষার কারণে শেয়ারবাজার এবং অফিসগুলোও সাধারণ সময়ের চেয়ে এক ঘণ্টা দেরিতে খোলে। যাতে পরীক্ষার্থীরা সহজে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছাতে পারে। দক্ষিণ কোরিয়ার অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক সমাজে এই নয় ঘণ্টার পরীক্ষাকে ভবিষ্যৎ সাফল্যের অন্যতম শর্ত হিসেবে ধরা হয়।
পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে অপেক্ষা করছিলেন ইয়েসিওন কিম নামের এক নারী। যার মেয়ে পরীক্ষা দিচ্ছিল। তিনি বলেন, এই পরীক্ষা প্রায় ২০ বছরের চেষ্টার পর এসেছে। একই সাথে এটি একটি নতুন শুরু।
এ বছর মোট ৫ লাখ ৫৪ হাজার ১৭৪ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষার জন্য নিবন্ধন করেছে। গত বছরের চেয়ে যা ৬ শতাংশ বেশি। এবং ২০১৯ সালের পর সবচেয়ে বেশি।
দক্ষিণ কোরিয়ায় এ ধরনের পরীক্ষা সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির মূল চাবিকাঠি হিসেবে ধরা হয়। সাত বছরের মধ্যে এবারই সবচেয়ে বেশি পরীক্ষার্থী এতে অংশ নিয়েছে। এদের বেশিরভাগই ২০০৭ সালে জন্ম নেওয়া। সেই বছর দক্ষিণ কোরিয়ায় জন্মহার ব্যাপক হারে বাড়ে। কারণ সেই সময়টায় নবজাতকের জন্য সৌভাগ্যের সময় মনে করা হয়েছিল।
দক্ষিণ কোরিয়া বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বয়স্ক জনসংখ্যার সমাজে পরিণত হচ্ছে। যদিও ২০২৪ সালে দেশটির জন্মহার বেড়ে ০.৭৫ হয়েছে।
তথ্যসূত্র : রয়টার্স
বিডি প্রতিদিন/কেএ