ক্যারিয়ারে টেস্ট খেলেছেন ৩৮টি। অধিনায়ক হিসেবে ১৫ টেস্ট। ক্যারিয়ারে ৭১ ইনিংসে সেঞ্চুরির সংখ্যা ৮। অধিনায়কত্বের ২৭ ইনিংসে সেঞ্চুরি ৪টি। পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর সাফল্য বেশি। নেতৃত্ব পাওয়ার পর থেকেই ধারাবাহিক পারফরমার নাজমুল। গত জুনে শ্রীলঙ্কা সিরিজের পর নেতৃত্ব ছেড়েছিলেন। আয়ারল্যান্ড সিরিজে পুনরায় নেতৃত্ব ফিরে পান। দায়িত্ব পেয়েই বাজিমাত করেন সেঞ্চুরি করে। দলকে ইনিংস ও ৪৭ রানে জিততে সামনে থেকে দল পরিচালনা করেছেন। পারফরমার নাজমুলকে বাংলাদেশের সফল টেস্ট অধিনায়ক বলাই যায়। তার অধিনায়কত্বে ১৫ টেস্টে পাঁচটি জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। অবশ্য তার চেয়ে বেশি জয় মুশফিকুর রহিমের। শততম টেস্ট খেলার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়ানো মুশফিকের নেতৃত্বে ৩৪ টেস্টে বাংলাদেশ জিতেছে সাতটি। নাজমুল পাঁচ জয়ের সর্বশেষটি পেয়েছেন সিলেটের ঘূর্ণি উইকেটে। আইরিশদের দুই ইনিংসে ২০ উইকেটের ১৪টিই নিয়েছেন তিন টাইগার স্পিনার তাইজুল ইসলাম, মেহেদি হাসান মিরাজ ও হাসান মুরাদ। ১৯ নভেম্বর মিরপুরে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট। মিরপুরের উইকেটে বাড়তি সুবিধা পাবেন স্পিনাররা। বল নিচু হবে। তারপরও টাইগার অধিনায়ক নাজমুল হোসেন স্পিন নয়, স্পোর্টিং উইকেটে খেলতে চান। স্পোর্টিং উইকেটে খেলার আগ্রহ প্রকাশ করেন নাজমুল সিলেটে টেস্ট জয়ের পর,
‘সিলেটে চার দিনই উইকেটের আচরণ দারুণ ছিল। স্পিনাররা দারুণ বোলিং করেছেন। তারপরও আমরা স্পোর্টিং উইকেটে খেলতে চাই।’
মিরপুর ও চট্টগ্রামের চেয়ে সিলেটের উইকেটে বাউন্স বেশি। গত এপ্রিলে জিম্বাবুয়ের ফাস্ট বোলার মুঝারিবানি একাই গুড়িয়ে দিয়েছিলেন নাজমুল বাহিনীকে। বাড়তি বাউন্সের কথা ভেবেই হয়তো উইকেটে কম রোলিং করেছেন সিলেটের কিউরেটর। বাংলাদেশের ১০৮তম টেস্ট ক্রিকেটার হিসেবে অভিষেক হওয়া বাঁ-হাতি স্পিনার হাসান মুরাদ দুই ইনিংসে দারুণ বোলিং করেছেন। প্রথম ইনিংসে উইকেট নিয়েছেন ২টি এবং দ্বিতীয় ইনিংসে ৪টি। ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট
খেলতে নামা মুরাদের ভূয়সী প্রশংসা করেন টাইগার অধিনায়ক নাজমুল, ‘অনেক দিন ধরে অপেক্ষা করছিলেন হাসান মুরাদ। সত্যি বলতে, সে আসলে তেমন কোনো সুযোগ পাচ্ছিল না। যদিও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে সে ধারাবাহিকভাবে ভালো বোলিং করছিল। সিলেটে সুযোগ পেয়েই নিজেকে মেলে ধরে। সে কতটা ভালো বোলার, সেটার প্রমাণ রেখেছে। মুরাদ ভীষণ সাহসী ও এক্সাইটিং বোলার।’ একেবারে নতুন হলেও দারুণ বল করেছেন মুরাদ। অবশ্য দলের সেরা বাঁ-হাতি স্পিনার তাইজুলও দারুণ করেছেন। দুই ইনিংসে তার উইকেট ৫টি। মিরপুর টেস্টে তাকে হাতছানি দিচ্ছে দুটি। প্রথমত সাকিব আল হাসানকে টপকে যাওয়া এবং দ্বিতীয়ত বাংলাদেশের বোলার হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে ২৫০ উইকেট শিকার। সাকিবের ২৪৬ উইকেট টপকাতে তাইজুলের দরকার ৫ উইকেট। ২৫০ উইকেটক্লাবে নাম লিখতে বাঁ-হাতি স্পিনারের দরকার আরও ৮ উইকেট।
বাংলাদেশ টেস্ট জিতেছে ইনিংস ও ৪৭ রানে। বোলাররা দারুণ বোলিং করেছেন। ব্যাটাররাও ছিলেন ধারাবাহিক। সেঞ্চুরি করেছেন ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় ১৭১ ও অধিনায়ক নাজমুল ১০০। হাফ সেঞ্চুরির ইনিংস খেলেছেন ওপেনার সাদমান ইসলাম ৮০, সাবেক অধিনায়ক মুমিনুল হক ৮২ ও টি-২০ অধিনায়ক লিটন দাস ৬০। নাজমুল বাহিনী ৮ উইকেটে ৫৮৭ রান তুলে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে। দুই ওপেনার সাদমান-মাহমুদুল ১৬৮ রানের ভিত গড়েন। যা উদ্বোধনী জুটিতে বাংলাদেশের চতুর্থ সেরা। সাড়ে তিন দিনে টেস্ট জয়ের পর উদ্বোধনী জুটির প্রশংসা করেন টাইগার অধিনায়ক, ‘দুই ওপেনার দারুণ জুটি গড়েছেন। দারুণ ব্যাটিং করেছেন দুজনে। আশা করি এ ধারাবাহিকতা তারা ধরে রাখবেন।’
টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশ ২৫ পেরিয়ে এখন ২৬ বছরে পা রেখেছে। আড়াই দশকে বাংলাদেশ টেস্ট খেলেছে ১৫৫টি। জয় সাকল্যে ২৪টি। গড় হিসেবে বছরে একটি করে নয়! ২৪ জয়ে আবার চারটি ইনিংস ব্যবধানে এবং সবই ঘরের মাটিতে। দুবার জিম্বাবুয়েকে ইনিংস ও ১০৬ রানে, ওয়েস্ট ইন্ডিজকে একবার ইনিংস ও ১৮৪ রানে এবং সর্বশেষ আয়ারল্যান্ডকে ইনিংস ও ৪৭ রানে।