পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের ৭৫৩ গেটরক্ষক (গেটম্যান) এক বছর ধরে কোনো বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না। রেল প্রকল্পে নিয়োগ পাওয়া এসব গেটরক্ষক দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু প্রকল্পে টাকা না থাকায় কোনো বেতন-ভাতা পাননি তারা। এ অবস্থায় তারা পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। কবে নাগাদ বেতন-ভাতা ছাড় হবে-তা নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের লেভেল ক্রসিং গেটসমূহের পুনর্বাসন ও মান উন্নয়ন নামে একটি প্রকল্প ২০১৫ সালের ১ জুলাই জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) অনুমোদন পায়। এ প্রকল্পের অধীন ২০১৬ সালে পশ্চিমাঞ্চল রেলে ৭৫৩ জন গেটরক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়। ওই গেটরক্ষকদের চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তরে ২০১৯ সালের আগস্টে রেলপথ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠায় পশ্চিমাঞ্চল রেল। প্রস্তাবটি রেল মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে যায় অর্থ বিভাগে। ২০২৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর অর্থ বিভাগ ফেরতপত্রে জানায়, ১৯৯৭ সালের জুলাই এবং পরবর্তীতে শুরু হওয়া কোনো প্রকল্পের চাকরি এ মুহূর্তে রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের সুযোগ নেই। ফলে ২০১৬ সালে নিয়োগ পাওয়া এসব গেটরক্ষক অদ্যাবধি রাজস্ব খাতে যেতে পারেনি। গত এক বছর ধরে খাতভুক্ত প্রকল্পে কোনো টাকা না থাকায় বেতন বঞ্চিত হচ্ছেন তারা।
পশ্চিম রেল সূত্রমতে, প্রকল্পটির আওতায় ২০১৬ সালে মোট ৮৫১ জন গেটরক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়। এর মধ্যে বর্তমানে কর্মরত আছেন ৭৫৩ জন। গেটরক্ষক তাহমিনা খাতুন বলেন, তার বাড়ি কিশোরগঞ্জের ভৈরবে। বেতন-ভাতা বন্ধ থাকায় সংসার চালাতে কষ্টের শেষ নেই। গেটরক্ষক লায়েব উদ্দিন বলেন, ‘এক বছর বেতন-ভাতা ছাড়াই দিনরাত গেট পাহারা দিচ্ছি। কিন্তু মাস শেষে বেতন-ভাতা পাচ্ছি না। ধারদেনা করে সংসার চালাতে গিয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছি।’ প্রকল্প পরিচালক (পিডি) বীরবল মণ্ডল বলেন, বর্তমানে প্রকল্পের তহবিলে কোনো টাকা নেই। এ কারণে ৭৫৩ জন গেটরক্ষকের বেতন-ভাতা হচ্ছে না।