গাজায় এক দিনে আরও ১১১ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করল ইসরায়েল। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৮২০ জন। এতে গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০ হাজার ৩৩২ জনে। আহত হয়েছেন আরও ১ লাখ ৪৭ হাজার। এ ছাড়া চরম খাদ্যঘাটতির কারণে উপত্যকাটিতে দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি অব্যাহত রয়েছে। শুক্রবার আরও সাত ফিলিস্তিনি অনাহারে প্রাণ হারিয়েছেন। এতে অনাহার ও অপুুষ্টিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫৪ জনে।
এদিকে গাজার জন্য ৪০ টনের মানবিক সহায়তা প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে ফ্রান্স। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ত্রাণবাহী চারটি বিমান জর্ডান হয়ে গাজায় ত্রাণ নিয়ে যাবে। প্রতিটি বিমানে ১০ টন করে ত্রাণ থাকবে। তবে তিনি বলেছেন, গাজায় যে মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে তার জন্য এ সহায়তা পর্যাপ্ত নয়। অন্যদিকে ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত না হলে গাজায় যুদ্ধ বিরতিহীনভাবে চলবে বলে সতর্ক করেছেন ইসরায়েলের সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়াল জামির। শুক্রবার গাজায় সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি বলেন, আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই আমরা জানতে পারব, কোনো চুক্তির মাধ্যমে জিম্মিদের মুক্ত করা সম্ভব কি না। যদি তা না হয়, তাহলে যুদ্ধ বিরতিহীনভাবে চলবে। বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে, জামির গাজার এক কমান্ড সেন্টারে সেনা ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নিয়েছেন। ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাসের হামলার সময় ইসরায়েল থেকে মোট ২৫১ জনকে অপহরণ করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে এখনো ৪৯ জন গাজায় বন্দি আছেন এবং এদের মধ্যে অন্তত ২৭ জন মারা গেছেন বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। চলতি সপ্তাহে হামাস ও অন্যান্য ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী দুটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। -রয়টার্স ও এএফপি
এতে দেখা গেছে, কয়েকজন জিম্মি শারীরিকভাবে অত্যন্ত দুর্বল। জিম্মিদের মুক্তি ও যুদ্ধবিরতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতায় চলা আলোচনা গত মাসে ভেস্তে যায়। এরপর থেকেই ইসরায়েলে অনেকেই কঠোর সামরিক পদক্ষেপের পক্ষে মত দিচ্ছেন। এদিকে, যুদ্ধের ২২ মাসে পা রাখা এ সংকটে যুদ্ধবিরতির জন্য আন্তর্জাতিক চাপ যেমন বাড়ছে, তেমনি জিম্মিদের পরিবারের সদস্যরাও বিক্ষোভ ও দাবির মাধ্যমে সরকারকে আলোচনার পথে ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানাচ্ছেন। তবে জামির এ দাবিগুলো প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বলেন, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী একটি নৈতিক বাহিনী। তাকে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে তুলে ধরার এ প্রচারণা উদ্দেশ্যমূলক ও প্রতারণামূলক। তিনি আরও বলেন, গাজার সাধারণ মানুষের মৃত্যু ও দুর্ভোগের জন্য দায়ী হামাস।