দালালের খপ্পরে পড়ে লিবিয়ার বন্দিশালায় নির্যাতনের শিকার হয়ে সজীব সরদার (২৮) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার রাতে পরিবারের সঙ্গে শেষ কথা হয় তার। গতকাল ভোরে মৃত্যুর খবর বাড়িতে পৌঁছালে শোকের ছায়া নেমে আসে। সজীব জেলার শিবচর উপজেলার নিলখী ইউনিয়নের বাগমারা গ্রামের চান মিয়া সরদারের ছেলে।
জানা গেছে, ইতালি যাওয়ার জন্য চার মাস আগে বাড়ি ছাড়েন সজীব ও তার চাচাতো ভাই রাকিব। স্থানীয় দালালের মাধ্যমে প্রথমে লিবিয়া পৌঁছান তারা। লিবিয়া যাওয়ার পরই দালাল চক্রের হাত বদল হয়। বন্দি হয় মাফিয়াদের হাতে। এরপর থেকেই চলে নির্যাতন। নির্যাতনের ভিডিও বাড়িতে পাঠিয়ে আদায় করা হয় মোটা অঙ্কের টাকা। লিবিয়ার বন্দিশালায় নির্যাতনের শিকার হতে থাকেন সজীব ও রাকিব। এক পর্যায়ে সজীব গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে লিবিয়াতে থাকা আরেক দালালের তত্ত্বাবধানে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে গতকাল তিনি মারা যান।
নিহতের স্বজনরা জানান, মাদারীপুর সদর উপজেলার শিরখাড়ার দালাল বোরহান ব্যাপারীর মাধ্যমে ১৫ লাখ টাকা চুক্তিতে ইতালি নিয়ে যাওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় নেওয়া হয়। সেখান থেকে সরাসরি ইতালি নেওয়ার কথা বলে মাফিয়াদের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়। দুই দফা বিক্রি করে সজীবকে। মারধর করে দফায় দফায় ৪৬ লাখ টাকা আদায় করে দালালচক্র। বুধবার সজীবের অবস্থা খারাপ দেখে মাফিয়ারা রাস্তায় ফেলে যায়। পরে খোঁজ নিয়ে লিবিয়ায় থাকা পরিচিত কয়েকজন সজীবকে উদ্ধার করে বাসায় নিয়ে আসে। পরে বেসরকারি একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।
সজীবের বাবা চান মিয়া সরদার বলেন, ‘আমার ছেলেকে দালাল বোরহান ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়া নিয়ে যায়। সেখানে বিক্রি করে দেয়। চার মাস আটকে রেখে মারধর করে। শিকল দিয়ে বেঁধে রাখে। মারতে মারতে আমার ছেলেটা গতকাল মারা গেছে।’
শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পারভীন খানম বলেন, বিষয়টি মর্মান্তিক। আমি খোঁজখবর নিচ্ছি। লাশ আনার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।