রাজধানীর মোহাম্মদপুরে র্যাব পরিচয়ে ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের অভিযোগে চারজনকে বিদেশি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-২ এর সদস্যরা। তারা হলেন- ডাকাত সরদার মো. বিল্লু মিয়া, সহযোগী আবু জাহের, আল আমিন ওরফে পাঠা আল আমিন ও মো. আলমগীর। এ সময় ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি রিভলবার, পাঁচ রাউন্ড গুলি, একটি পাইপ গান, একটি কার্টিজ, একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা, একটি চাকু, একটি রেঞ্জ, একটি সামুরাই, একটি শাবল, একটি স্ক্রু ড্রাইভার, দুটি প্লায়ার্স, র্যাব-পুলিশের পোশাকসদৃশ জ্যাকেট, কালো ক্যাপ ও চারটি মোবাইল উদ্ধার করা হয়।
গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-২ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মো. খালিদুল হক হাওলাদার। তিনি বলেন, ডাকাত দলের সদস্যরা বিভিন্ন পেশার ছদ্মবেশে বিভিন্ন এলাকায় রেকি করে তথ্য সংগ্রহ করতেন। বিশেষ করে ডাকাত সরদার বিল্লু অভিজাত এলাকায় রংমিস্ত্রির ছদ্মবেশে তথ্য সংগ্রহ করতেন। পরে সুযোগ বুঝে দলবল নিয়ে করতেন ডাকাতি। ঈদ ও পূজার ছুটির সুযোগে ডাকাত দল বেশি সক্রিয় হতো। গ্রেপ্তার ডাকাত দল আসন্ন ঈদে ডাকাতির ছক তৈরি করছিল বলেও তিনি জানান।
র্যাব-২ এর প্রধান খালিদুল বলেন, বাঁশবাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে ডাকাত সরদার বিল্লুকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাকে তল্লাশি করে কোমরে রক্ষিত অবস্থায় একটি বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র এবং প্যান্টের ডান পকেট থেকে পাঁচ রাউন্ড গুলি, একটি খালি খোসা ও দুটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, তারা দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে র্যাব পরিচয়ে ডাকাতি, অস্ত্র, মাদক কারবার ও সিএনজি ছিনতাই চক্রের সঙ্গে জড়িত।
তিনি মোহাম্মদপুর ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় চাঁদাবাজি, মাদক, ভূমি দখল, চুরি-ছিনতাই, ডাকাতিসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। পাশাপাশি গ্রুপটি নিজেদের র্যাব সদস্য পরিচয় দিয়ে ডাকাতি করতেন। গ্রেপ্তার বিল্লুর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মোহাম্মদপুর থানার চাঁদ উদ্যান লাউতলা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তার সহযোগী আবু জাহের, আল আমিন ওরফে পাঠা আল আমিন ও মো. আলমগীরকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে তাদের দুই সহযোগী মো. রাজা ও মো. নাগর পালিয়ে যায়।
এক প্রশ্নের জবাবে র?্যাব-২ এর অধিনায়ক বলেন, ডাকাত সরদার বিল্লু ৮ বছর আগে গাইবান্ধা থেকে ঢাকায় আসেন। তিনি রাজধানীর অভিজাত এলাকায় ঘুরে ঘুরে রংমিস্ত্রির কাজ করতেন। মূলত তিনি এই পেশার আড়ালে ডাকাতির জন্য রেকি করতেন। এরপর তার সংগ্রহ করা তথ্যের ভিত্তিতেই দলের সদস্যদের নিয়ে ডাকাতি করতেন। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে হত্যা, মাদকসহ বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলার তথ্য পেয়েছে র?্যাব। ডাকাত বিল্লুর দলে একাধিক নারী সদস্য রয়েছেন, যাদের ব্যবহার করে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালককে মারধর করে গাড়ি ছিনিয়ে নেওয়ার কাজ করতেন।