রাজশাহী জেলা ও মহানগর বিএনপির বর্তমান আহ্বায়ক কমিটি হয়েছিল তিন মাসের জন্য। কিন্তু সেই স্বল্পমেয়াদি কমিটি এক বছর, দুই বছর নয়, চলছে ছয় বছর ধরে! আগামী সংসদ নির্বাচন ঘিরে আসনগুলোতে চলছে ভোটের হাওয়া। বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরাও মাঠে ছুটছেন। তবে দীর্ঘ সময় সম্মেলন না হওয়ায় দলটির জেলা, মহানগর, ওয়ার্ড, থানাসহ ইউনিটগুলোতে আসেনি নতুন নেতৃত্ব। এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন তপু বলেন, দীর্ঘ ছয় বছর কোনোভাবেই আহ্বায়ক কমিটি থাকতে পারে না। দ্রুত সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্বের দাবি জানান তিনি। রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠন হয়েছিল তিন মাসের জন্য। সেই কমিটির বয়স এখন ছয় বছর। একইভাবে ২০২১ সালে মহানগর বিএনপির কমিটিও তিন মাসের জন্য গঠন করা হয়। এ কমিটির বয়স চার বছর পেরিয়েছে। প্রতিটি ইউনিটেই আছে একাধিক গ্রুপ। প্রভাব বাড়াতে গিয়ে প্রতিপক্ষ গ্রুপের ওপর হামলা ও পাল্টা হামলার ঘটনাও ঘটেছে। ২০২১ সালের ১০ মার্চ তিন মাসের জন্য দলটির রাজশাহী মহানগর শাখার আহ্বায়ক কমিটি গঠন হয়। মহানগরে এরশাদ আলী ঈশাকে আহ্বায়ক ও মামুনুর রশীদকে করা হয় সদস্যসচিব। প্রবীণ নেতা মিজানুর রহমান মিনু, মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ও শফিকুল হক মিলন দীর্ঘদিন নগর বিএনপির নেতৃত্বে থাকলেও তাদের অনুসারীদের পুরোপুরি বাদ দেওয়া হয়। আহ্বায়ক, যুগ্ম আহ্বায়ক ও সদস্যসচিব করা হয় সিনিয়র নেতাদের বিপরীত মেরুর লোকদের। বিএনপি নেতা-কর্মীরা জানান, বিপরীত বলয়ের নেতৃত্ব দায়িত্ব পাওয়ার পর দীর্ঘদিন মিনু, বুলবুল ও মিলনকে নতুন আহ্বায়ক কমিটির কোনো কর্মসূচিতে ঢাকা হতো না কিংবা তারাও যেতেন না। সেই বিরোধ বা দূরত্ব এখনো মেটেনি। এ বিষয়ে নগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলন বলেন, ‘মহানগরে নতুন নেতৃত্ব দায়িত্ব নেওয়ার পরদিন শহরের ৩৭টি ওয়ার্ড, সাতটি থানা কমিটি ভেঙে দেয়। এ কারণে তৃণমূল মুখ ফিরিয়ে নেয়। তৃণমূলের সঙ্গে তাদের দূরত্ব তৈরি হয়েছে। ফলে এ কমিটি ৩৭টি ওয়ার্ড এবং সাতটি থানা ইউনিটের কোনোটিতে সম্মেলন করতে পারেনি। আবার আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের সময় নেতা-কর্মীরা রাস্তায় নামতে পারেননি। তবে ৫ আগস্টের পর নতুন মুখের হিড়িক পড়েছে। তাদের দিয়ে ঘরে বসে আহ্বায়ক কমিটি করা হচ্ছে। এতে কমিটি প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।’ নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী ঈশা বলেন, ‘প্রায় সব ওয়ার্ডে নতুন কমিটি হয়ে গেছে। এখন থানা কমিটি করার জন্য সম্মেলনের চেষ্টা করছি। থানার সম্মেলন শেষ করে মহানগর সম্মেলন দিয়ে দেব।’ আর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ বলেন, জেলার ৫-৬টি ইউনিট বাদে সবকটির সম্মেলন হয়েছে। বাকিগুলোর সম্মেলন শিগগিরই হবে। জেলা বিএনপির এক শীর্ষ নেতা বলেন, ‘আহ্বায়ক কমিটি ২৩টি ইউনিটের মধ্যে মাত্র ৮টিতে কমিটি দিতে পেরেছে। সব ইউনিটের সম্মেলন হয়ে গেলে তারা আর দলের নেতৃত্বে থাকতে পারবেন না বলে নতুন কমিটি দিচ্ছেন না।’