সিলেট নগরীতে সিটি করপোরেশন থেকে রিকশার ভাড়া নির্ধারণ করা হলেও সিএনজির ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট ভাড়া নির্ধারণ না করায় চালকরা নিজেদের ইচ্ছামতো ভাড়া নিচ্ছেন। এতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সিএনজি চালকরা নির্ধারিত ভাড়া না মেনে নিজেদের ইচ্ছামতো বাড়তি টাকা নিচ্ছেন। ড্রাইভার সমিতি থেকে কিছু ভাড়া নির্ধারণ করা হলেও সেটি বাস্তবায়নে কোনো নজরদারি নেই।
শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক থেকে আম্বরখানায় নিয়মিত ভাড়া ১৫ টাকা হলেও চালকরা ২০ টাকা দাবি করেন। আবার মূল ফটক থেকে বন্দরবাজারের ভাড়া কখনো ২৫ টাকা, কখনো ৩০ টাকা, আবার কখনো ৪০ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হয়। বিশেষ করে রাতে যাতায়াতের সময় নির্ধারিত ভাড়ার তিন গুণ পর্যন্ত বেশি নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার সময় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হয়।
এছাড়াও সম্প্রতি একটি অপরাধী চক্র সিএনজিতে ‘ডেভিলস ব্রেথ’ (হ্যালুসিনেটিক ড্রাগ) ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের সর্বস্ব লুটে নিচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রায়ই কোনো না কোনো শিক্ষার্থী এই মাদক প্রয়োগের মাধ্যমে অজ্ঞান হয়ে প্রতারিত হচ্ছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস ব্যতীত সিএনজি যাতায়াত শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপত্তাহীন হয়ে উঠেছে। নগরীর কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ড থেকে মধুশহীদ এলাকায় আগে যেখানে ভাড়া ছিল ৬০ থেকে ৭০ টাকা, এখন তা বেড়ে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা হয়েছে।
যাত্রীর তুলনায় পর্যাপ্ত সিএনজি থাকলেও, কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ডের সিএনজি চালকদের সিন্ডিকেটের কারণে শিক্ষার্থীরা বাধ্য হয়েই অতিরিক্ত ভাড়া দিতে বাধ্য হচ্ছেন বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।
শুধু নগরের বাহিরেই নয়, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ভেতরেও রিকশা চালকরা নিজেদের ইচ্ছেমতো ভাড়া আদায় করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক ড. এছাক মিয়া বলেন, "সম্প্রতি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়েছি যে, সিএনজিতে যাতায়াতের সময় তারা দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। তাই আগামীকাল আমরা সিলেটের সিএনজি চালক সমিতির সঙ্গে মিটিং করব এবং বিস্তারিত আলোচনা করব।"
শিক্ষার্থীদের দাবি, সিলেটের সিএনজির জন্য নির্দিষ্ট ভাড়া নির্ধারণ করে তা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। এছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে শিক্ষার্থীদের নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করতে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
বিডি প্রতিদিন/আশিক