অপর্যাপ্ত ঘুম, দীর্ঘ সময় স্ক্রিনে কাজ, মানসিক চাপ এবং দূষণ- এসব কারণে আমাদের চোখ প্রতিদিনই চাপের মধ্য দিয়ে যায়। এর প্রথম লক্ষণগুলো দেখা যায় চোখের চারপাশে, যা- কালো দাগ, ফোলাভাব বা বলিরেখার সৃষ্টি করে। তাই, চোখের বিশেষ যত্ন নিতে আই ক্রিম অপরিহার্য সমাধান। এটি চোখের নিচের ত্বককে সুরক্ষিত ও পুষ্টি দিয়ে সতেজ এবং উজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে।
আই ক্রিম কেন জরুরি?
আপনার মুখের অন্য অংশের তুলনায় চোখের চারপাশের ত্বক পাতলা এবং সংবেদনশীল। তাই এখানেই বার্ধক্যের লক্ষণগুলো সবচেয়ে দ্রুত প্রকাশ পায়। আই ক্রিম এই নির্দিষ্ট অংশের জন্য বিশেষভাবে তৈরি, যা এসব সমস্যা কার্যকরভাবে মোকাবিলা করতে পারে।
আই ক্রিম কেনার আগে দেখে নিন-
► কালো দাগ ও ফোলাভাবের জন্য : ক্যাফেইন এবং ভিটামিন কে রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে ফোলাভাব কমায়।
► বলিরেখার জন্য : রেটিনল এবং পেপটাইড কোলাজেন উৎপাদন বাড়িয়ে ত্বক মসৃণ করে। হায়ালুরোনিক অ্যাসিড ত্বককে আর্দ্র রাখে এবং বলিরেখা কমিয়ে ত্বক টানটান দেখায়।
► আর্দ্রতা ও সুরক্ষার জন্য : সেরামাইডস এবং শিয়া বাটার ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে। ভিটামিন সি এবং অ্যালোভেরা-এর মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্ষতিকর প্রভাব থেকে ত্বককে রক্ষা করে।
- বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০ বছর বয়স থেকেই আই ক্রিম ব্যবহার করা শুরু করা উচিত। এটি একটি প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে কাজ করে, যা দীর্ঘমেয়াদি ফলাফল নিশ্চিত করে।
আই ক্রিম ব্যবহারের সহজ নিয়ম
আই ক্রিম ব্যবহারের সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করলে এর কার্যকারিতা বহুগুণ বেড়ে যায়। জেনে নিন বিস্তারিত...
১. পরিমাণ ও আঙুলের ব্যবহার : একটি মটরদানার আকারের সমান ক্রিম আপনার অনুর্বর আঙুলে (ring finger) নিন। ডার্মাটোলজিস্টরা এই আঙুলটি ব্যবহারের পরামর্শ দেন কারণ এটি সবচেয়ে কম চাপ প্রয়োগ করে, যা চোখের পাতলা ত্বকের জন্য নিরাপদ।
২. ডট করে লাগান : চোখের নিচের অংশে, ভেতরের কোনা থেকে শুরু করে ভ্রুর হাড় পর্যন্ত ছোট ছোট ডট দিয়ে ক্রিম লাগান। চোখের পাতার খুব কাছাকাছি বা চোখের ওপরে সরাসরি লাগাবেন না, এতে জ্বালাপোড়া হতে পারে।
৩. আলতোভাবে মিশিয়ে দিন : আঙুলের আলতো স্পর্শে ক্রিমটিকে অর্ধ-বৃত্তাকার গতিতে ত্বকের সঙ্গে মিশিয়ে দিন। ক্রিমটি পুরোপুরি শোষিত না হওয়া পর্যন্ত আলতোভাবে ট্যাপ করতে থাকুন। ত্বককে জোরে ঘষা বা টানা থেকে বিরত থাকুন।
৪. সঠিক ক্রমে ব্যবহার : ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের আগে লাগানো হলো আই ক্রিম ব্যবহারের সঠিক নিয়ম। এতে আই ক্রিমের বিশেষ উপাদানগুলো সহজেই ত্বকের গভীরে প্রবেশ করতে পারে।
দিনে ও রাতে আই ক্রিমের ব্যবহার
সর্বোত্তম ফলাফলের জন্য দিনে দু’বার আই ক্রিম ব্যবহার করা উচিত। তবে আপনি দিনের এবং রাতের জন্য আলাদা ধরনের ক্রিম বেছে নিতে পারেন।
► দিনের বেলায় : অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ যেমন ভিটামিন সি বা গ্রিনটি এক্সট্র্যাক্টযুক্ত আই ক্রিম ব্যবহার করলে তা পরিবেশ দূষণ এবং UV রশ্মি থেকে চোখকে রক্ষা করে। ক্যাফেইনযুক্ত ক্রিম দিনে ব্যবহার করলে চোখের ফোলাভাব কমে এবং চোখ উজ্জ্বল দেখায়।
► রাতের বেলায় : রাতে শরীর যখন বিশ্রাম নেয়, ত্বক তখন নিজে থেকে মেরামত হয়। এই সময় রেটিনল বা পেপটাইডযুক্ত আই ক্রিম কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায় বলিরেখা কমায়। হায়ালুরোনিক অ্যাসিড যুক্ত ক্রিম রাতে ত্বককে গভীরভাবে আর্দ্র থাকে।
লেখা : সাদিয়া সারা