ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরাসরি কোনো আলোচনা হবে না। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আগেই ফলাফল ঘোষণা করেছে। আলোচনার নামে এটা আসলে চাপিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্ত।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে মঙ্গলবার টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে খামেনি এ অবস্থান জানান। এর আগে জার্মানি, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি প্রধান কায়া কাল্লাসের সঙ্গে বৈঠক করেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। আলোচনায় মূল বিষয় ছিল আসন্ন জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল।
ইউরোপীয় দেশগুলো বলছে, তেহরান তার পারমাণবিক কর্মসূচি সীমিত না করলে এবং আন্তর্জাতিক পরিদর্শকদের প্রবেশাধিকার না দিলে তারা নিষেধাজ্ঞা স্থগিত রাখবে না। জাতিসংঘের পরমাণু সংস্থা (আইএইএ) জানিয়েছে, ইরান অনুমোদিত সীমার চেয়ে ৪০ গুণ বেশি ইউরেনিয়াম মজুত করেছে।
২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি অনুযায়ী ইরান কিছু সীমাবদ্ধতার বিনিময়ে নিষেধাজ্ঞা থেকে ছাড় পেয়েছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৮ সালে একতরফাভাবে চুক্তি থেকে সরে গিয়ে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। পরবর্তীতে বাইডেন প্রশাসনও একই নীতি চালু রাখে।
খামেনি জানান, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র বানাতে চায় না, তবে শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শক্তি ব্যবহারের অধিকার থেকে সরে আসবে না। তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ‘বিশ্বের এক নম্বর সন্ত্রাসী পৃষ্ঠপোষক’ বলেও উল্লেখ করেন।
এদিকে, আলোচনায় অগ্রগতি না হলে শনিবার থেকেই নিষেধাজ্ঞা স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্যকর হবে। এতে ইরানের বিদেশি সম্পদ জব্দ, অস্ত্র চুক্তি স্থগিত এবং ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিতে বাধা আসবে। ইরানি সংসদের কট্টরপন্থী সদস্যরা ইতিমধ্যেই পারমাণবিক বোমা তৈরির দাবি তুলেছেন।
তবে কিছুটা আশার কথাও শোনা যাচ্ছে। আইএইএ প্রধান রাফায়েল গ্রোসি জানিয়েছেন, যদি সমঝোতা হয়, তাদের পরিদর্শক দল প্রস্তুত আছে। তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে পথ বের করা সম্ভব।’
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল