ভেঙে পড়েছে চট্টগ্রাম নগরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। সময়মতো বর্জ্য অপসারণ হয় না। কখনো দুই দিন, কখনো তিন পর্যন্ত পড়ে থাকে বর্জ্য। বিশেষ করে ওয়ার্ডের গলির ময়লাগুলো দিনের পর দিন থেকে যায়। এ সময় বর্জ্যগুলো পচে এলাকার সর্বত্র দুর্গন্ধ ছড়ায়। নষ্ট করে পরিবেশ। ৭০ লাখ জনসংখ্যা অধ্যুষিত এই নগরে দৈনিক গৃহস্থালির বর্জ্য উৎপাদিত হয় প্রায় তিন হাজার টন। চসিকের উদ্যোগে দৈনিক প্রায় ২৫০০ টন বর্জ্য সংগ্রহ করা হয়। বাকিগুলো নালা-নর্দমা হয়ে নগরীর খালে পড়ে।
চসিকের ওয়ার্ড আছে ৪১টি। অতীতে প্রতিটি ওয়ার্ডে একজন করে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি কাউন্সিলর থাকতেন। তিনি এলাকায় বর্জ্য অপসারণসহ নানা দিক নজরদারি করতেন। কিন্তু ৫ আগস্টের পর কাউন্সিলররা চলে যান আত্মগোপনে। পরে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় নাগরিক বিষয়গুলো দেখভাল করার জন্য ছয়জন আঞ্চলিক কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়। এরপরও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আশানুরূপ হয় না।
চন্দনপুরা পশ্চিম গলির বাসিন্দা হেলাল উদ্দিন বলেন, গলির মাঝখানে একটি খোলা ডাস্টবিন আছে। এখানে দিনের পর দিন বর্জ্য পড়ে থাকে। এ সময় আশপাশে দুর্গন্ধ হয়ে যায়। পরিবেশও নষ্ট হয়। চসিকের উপ-প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা প্রণব কুমার শর্মা বলেন, আমাদের সাতজন জোন কর্মকর্তা, ১০ জন সুপারভাইজার নিয়মিত কাজগুলো তদারক করেন। তাছাড়া নগরের প্রধান প্রধান সড়কগুলো আমরা নিয়মিতই ঘুরে ঘুরে বর্জ্য অপসারণের কাজটা করে থাকি। এরপর হয়তো গলি বা আবাসিকের ভিতরে আবর্জনা থেকে যায়। তবে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।
চসিকের পরিচ্ছন্ন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বর্জ্য অপসারণের সুবিধায় নগরের ৪১টি ওয়ার্ডকে ছয়টি অঞ্চলে ভাগ করা হয়েছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কাজে ব্যবহৃত হয় ১২০টি বড় গাড়ি, ৫৫টি টমটম ও ৫০০টি ভ্যান। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কাজে যুক্ত আছেন ৩ হাজার ৫৫৮ জন শ্রমিক। পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা বর্জ্যগুলো বাসা এবং ডাস্টবিন থেকে ভ্যানগাড়িতে করে সংগ্রহ করার পর নির্দিষ্ট সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশনে ফেলা হয়। এরপর সেখান থেকে বড় ট্রাকে করে নগরীর দক্ষিণ দিকের আবর্জনাগুলো ফেলা হয় হালিশহরের সমুদ্র উপকূলের আনন্দবাজার এলাকায়। ১০ একরের বেশি জায়গার এ স্থানে প্রতিদিন আবর্জনা ফেলা হয় প্রায় দেড় হাজার টন। গত কয়েক যুগ ধরে জমে আবর্জনার পাহাড় তৈরি হয়েছে। তাছাড়া অন্য বর্জ্যাগার বায়েজিদ আরেফিন নগরেও ফেলা হয় অন্তত দেড় হাজার টন বর্জ্য। নগরের দুই প্রান্তে অবস্থিত প্রধান বর্জ্যাগারে খোলা ট্রাকে নেওয়া হয়। ফলে বর্জ্যগুলে নানাভাবে সড়কে পড়ে পরিবেশ নষ্ট করে।