চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নগরের হালিশহর এলাকায় আট কাঠা জায়গার ওপর নির্মাণ করছে বহুতল ভবন। তবে জায়গাটির মালিক জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ (জাগৃক)। ইতোমধ্যে ভবনের নিচতলার কাজ শেষ। নগরের হালিশহর বি-ব্লক কবরস্থানের পূর্ব পাশে জাগৃকের দীর্ঘদিন ধরে খালি পড়ে থাকা জায়গাটির বর্তমানে স্থানীয় বাজার মূল্য প্রায় ১০ কোটি টাকা।
চসিক লোকাল গভর্নমেন্ট কভিড-১৯ রেসপন্স অ্যান্ড রিকভারি প্রজেক্ট (এলজিসিআরআরপি) শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ভবনটি নির্মাণ করছে। এটি বিশ্বব্যাংকের একটি প্রকল্প। গত বছরের ১৭ নভেম্বর ১৩ কোটি ৭৭ লাখ টাকা ব্যয়ে সাত তলা বিশিষ্ট কিচেন মার্কেট কাম কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। বর্তমানে জাগৃকের জায়গাটিতে পুরোদমে নির্মাণকাজ চলছে। আগামী ১৪ নভেম্বর কাজ শেষ করার কথা।
অভিযোগ উঠেছে, জায়গাটির মালিক জাগৃক হলেও চসিক স্থাপনা নির্মাণে জাগৃক থেকে ক্রয় বা কোনো অনুমতি না নিয়ে ভবন নির্মাণ করছে। এমনকি জায়গাটির মালিক জাগৃককেও অবহিত করা হয়নি। তা ছাড়া, মালিকানার প্রয়োজনীয় কাগজ না থাকায় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) থেকে ভবন নির্মাণের অনুমতিও নিতে পারেনি চসিক। তবে চসিক ও জাগৃকের একশ্রেণির অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে এমন কাজটি হওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, গৃহায়নের জায়গায় চসিক গত কয়েক বছর ধরে প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই, বিশ্বব্যাংককে সম্পৃক্ত করা এবং ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করা- এসব কাজ করলেও জানে না জায়গার মালিক। গত কয়েকদিন ধরে সংস্থাটি কাগজপত্র খোঁজা শুরু করে এবং জায়গা পরিদর্শনে যায়। এরপর জাগৃক চসিককে কারণ দর্শানোর চিঠিও দেয়।
জাগৃক চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. নুরুল বাসির বলেন, আমাদের জায়গায় চসিকের ভবন নির্মাণের বিষয়টি শুনেছি। এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম অফিস থেকে একটি কারণ দর্শানোর চিঠিও দেওয়া হয়েছে। আমরা এ ব্যাপারে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেব। তিনি বলেন, চসিকের জায়গার দরকার হলে আমাদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া অনুসরণ করে নিতে পারত। কিন্তু এখন তা না করে, আমাদের অবহিত না করেই তারা ভবন নির্মাণ কাজ করছে।
জাগৃক চট্টগ্রামের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী নেজামুল হক মজুমদার বলেন, গত শনিবার জায়গাটি সার্ভে করা হয়েছে। এখন প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করা হচ্ছে। তা ছাড়া, ইতোমধ্যে চসিককে একটি নোটিসও দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনীয় কাগজ সংগ্রহের পর কাজ বন্ধ করার জন্য আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ওই জায়গাটি জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের, তা ঠিক। তবে দীর্ঘদিন ধরে চসিক ব্যবহার করে আসছে। এখন সেখানে বহুতল ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। তা ছাড়া এখানে কিছু জায়গায় অব্যবহৃত থাকার কারণে বেদখল হয়ে যাচ্ছিল। তিনি বলেন, জাগৃক চাইলে এখন আমরা প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া অনুসরণ করে জায়গাটি হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করব। এখানে কোনো সমস্যা হবে বলে মনে করি না।