সিডনিতে একুশে একাডেমী অস্ট্রেলিয়ার আয়োজনে দিনব্যাপী ২৬তম বইমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সিডনির অ্যাশফিল্ড পার্কে এ আয়োজন করা হয়।
এদিন সকাল ৯:২১ মিনিটে প্রভাত ফেরির মধ্য দিয়ে বইমেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। প্রভাত ফেরিতে ৩০টি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নিজ নিজ ব্যানার এবং পুষ্পস্তবক নিয়ে এতে অংশগ্রহণ করে। এ ছাড়াও নিউক্যাসেল এবং ক্যানবেরা থেকে বইমেলা প্রাঙ্গণে আগত বাংলাদেশি সাহিত্য প্রেমীরা, পরিবার-পরিজন নিয়ে প্রভাতফেরিতে অংশগ্রহণ করে ভাষা শহিদদের স্মরণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
২০০৬ সালে একুশে একাডেমী সিডনির অ্যাশফিল্ড পার্কে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করে। তারপর থেকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে দেশীয় আদলে এই মেলায় প্রভাত ফেরির আয়োজন করা হয়।
দুপুর ১ টায় শাখাওয়াৎ নয়নের সঞ্চালনায় একুশে একাডেমীর কার্যকরী কমিটি এবং উপদেষ্টা কমিটির উপস্থিতিতে মাতৃভাষা সাহিত্য সংকলনের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। একইসঙ্গে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী সাতজন কবি-লেখকের নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
একুশে একাডেমীর সাধারণ সম্পাদক বুলবুল আহমেদ সাজুর সঞ্চালনায় অফিসিয়াল প্রোগ্রামে একুশে একাডেমী থেকে প্রকাশিত 'মাতৃভাষা' সাহিত্য সংকলনে সৃজনশীল চিত্রকর্ম ও ২৫ বছরের অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ শ্রীআশীষ ভট্টাচার্যকে ‘মাতৃভাষা দিবস আজীবন সম্মাননা’ প্রদান করা হয়।
শিক্ষাবিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. সুধীর লোধ এবং সমাজসেবী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. আয়াজ চৌধুরীকেও প্রবাসে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি বিকাশে অবদান রাখার জন্য সম্মাননা প্রদান করা হয়।
পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে কাউন্সিলর মাসুদ খলিল, ক্যাম্পবেলটাউন সিটিকাউন্সিল, কাউন্সিলর সুমন সাহা, কাম্বারল্যান্ড সিটি কাউন্সিল, কাউন্সিলরএলিজা আজাদ রহমান টুম্পা, ক্যামডেন কাউন্সিল, কাউন্সিলর অ্যাশ রহমান, ক্যাম্পবেলটাউন সিটি কাউন্সিল, কাউন্সিলর শিরিন আখতার ও ডেপুটি মেয়র কার্ল সালেহ ক্যান্টারবেরি ব্যাঙ্কসটাউন কাউন্সিল উপস্থিত ছিলেন। এসময় আমন্ত্রিত অতিথিরা বক্তব্য রাখেন।
মহান ভাষা আন্দোলনের স্মরণে মঞ্চে ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, নাচ, গান, কবিতা আবৃত্তি, সংলাপ সহ বিভিন্ন আয়োজন। ড. স্বপন পাল এবং লরেন্স ব্যারেলের পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনায় মঞ্চসজ্জা সকলেরই নজর কাড়ে।
একুশে একাডেমীর সহ-সভাপতি পিয়াসা বড়ুয়ার সঞ্চালনায় সাংস্কৃতিক দল ‘অভিযাত্রী’র পরিবেশনায় নেতৃত্ব দেন অমিয়া মতিন, ফুলকলি ও কিশলয়ের নেতৃত্ব দেন সুমিতা দে, এবং নৃত্যানুষ্ঠানের নেতৃত্ব দেন পিয়াসা বড়ুয়া। সাংস্কৃতিক পর্বে আরও অংশগ্রহণ করেন জুম্মা সাংস্কৃতিক সংগঠন, ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন, কালাংকান ডান্স গ্রুপ, এপিং ওয়েস্ট চাইনিজ স্কুল ও নেপালিজ স্কুল।
সবশেষে, সংগঠনের সহসভাপতি পিয়াসা বড়ুয়া ‘১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৬’ বইমেলার তারিখ ঘোষণা করেন। পরে সকল শুভাকাঙ্ক্ষী ও শুভানুধ্যায়ীকে ধন্যবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
উল্লেখ্য, ১৯৯৯ সাল থেকে একুশে একাডেমী অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে এ বইমেলার আয়োজন করছে।
বিডি প্রতিদিন/মুসা