১০ মে, কুয়ালালামপুরের দি সিক্রেট গার্ডেন-ওয়ান উত্তামা শপিং সেন্টার-এ অনুষ্ঠিত হয় মালয়েশিয়ান-আসিয়ান ইয়ুথ এসডিজি সামিট ২০২৫। এক ব্যতিক্রমী যুব নেতৃত্বাধীন এই আঞ্চলিক আয়োজনটিতে ৩০০-র বেশি অংশীদার, বিশেষজ্ঞ ও যুব প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন।
এই সামিটের আয়োজন করে অল-পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপ মালয়েশিয়া ফর এসডিজি এপিপিজিএম-এসডিজি এবং মাইএসডিজি একাডেমি। এই আয়োজনকে সহযোগিতা করে মালয়েশিয়ার যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, মালয়েশিয়ান ইয়ুথ কাউন্সিল এবং জাতিসংঘের মালয়েশিয়া কান্ট্রি অফিস।
এই সম্মেলনে ইয়ুথ হাব ফাউন্ডেশন ছিল একটি স্ট্রাটেজিক পার্টনার। ইয়ুথ হাব ফাউন্ডেশন একটি যুব নেতৃত্বাধীন সংস্থা, যা জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি)-র সাথে সঙ্গতি রেখে তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষা, উদ্যোক্তা তৈরি, সামাজিক উদ্ভাবন এবং যুব উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। সংস্থাটি মালয়েশিয়ার সিএসও–এসডিজি অ্যালায়েন্স এর সদস্য হিসেবে দেশটিতে এসডিজি বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। ইয়ুথ হাব মূলত এসডিজি ৩ (সুস্বাস্থ্য ও মঙ্গল), ৪ (গুণগত শিক্ষা), ৫ (লিঙ্গ সমতা), ৮ (শোভন কর্ম ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি), ৯ (শিল্প, উদ্ভাবন ও অবকাঠামো) এবং ১৭ (অংশীদারিত্ব) লক্ষ্যমাত্রার ওপর গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে এবং ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সুনাম অর্জন করেছে।
সম্মেলনের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ ছিল W.A.Y. Forward Movement-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন। এই উদ্যোগটি তৈরি করেছে এপিপিজিএম-এসডিজি ও মাইএসডিজি একাডেমি। যার উদ্দেশ্য হচ্ছে যুবসমাজকে কেন্দ্র করে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনের জন্য দীর্ঘমেয়াদী এবং খাতভিত্তিক অংশীদারিত্ব গড়ে তোলা।
W.A.Y. অর্থাৎ Weaving partnerships to Accelerate SDGs with You(th)—এই উদ্যোগের মাধ্যমে যুবদের অংশগ্রহণকে নেতৃত্বে রূপান্তর করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
এই সম্মেলনে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দাতো’ শ্রী সাইফুদ্দিন বিন আব্দুল্লাহ, ডেপুটি চেয়ার, এপিপিজিএম-এসডিজি ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী, রবার্ট গাস জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী এবং প্রতিনিধি, ইউনিসেফ মালয়েশিয়া এবং বিশেষ প্রতিনিধি, ব্রুনাই দারুসসালাম, ডাতো’ ডঃ নাগুলেন্দ্রন, প্রফেসর ডঃ ডেনিসন, জোয়েল এনজি, ফিলাস জর্জ,ডঃ ফ্রাঞ্চি এবং মিস পিনিয়াডা রেইনিগার।
উক্ত সম্মেলনে ইয়ুথ হাব ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আলী তারেক, মহাচসিব পাভেল সারওয়ার ও কোষাধ্যক্ষ সুমাইয়া জাফরিন চৌধুরীসহ কয়েকজন প্রতিনিধি অংশগ্রহন করেন।
মাইএসডিজি একাডেমি-এর পরিচালক ও সম্মেলনের উপদেষ্টা জোয়েল এনজি বলেন, অংশীদারিত্ব মানে শুধু পৃষ্ঠপোষকতা নয়—এটি হল অভিন্ন মূল্য ও উদ্দেশ্য ভাগ করে নেওয়া। তিনি আরও বলেন, W.A.Y. Forward যুবদের শুধু উন্নয়নের উপকারভোগী নয়, বরং পদ্ধতিগত পরিবর্তনের রূপকার হিসেবে তুলে ধরেছে।
এই সম্মেলন ছিল প্রচলিত কাঠামোর বাইরে গিয়ে তৈরি এক ইন্টারেক্টিভ প্ল্যাটফর্ম। এতে ছিল: এসডিজি ল্যাবস, সাইড ইভেন্টস, ড্রিম ল্যাব ২০৫০, এসডিজি-এক্সপ্লোরার।
ইউটোপিয়া নাইট এর মধ্য দিয়ে সামিটের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম সমাপ্তি হয়। যেখানে ছিল জ্যাজ, ড্রাম সার্কেল এবং W.A.Y. Forward ভিশনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা।
সম্মেলনে আসিয়ান প্রতিনিধি, যুব রাজনীতিক, কর্পোরেট অংশীদার, তৃণমূল নেতৃবৃন্দ এবং এসডিজি কর্মীদের উপস্থিতি কোয়াড্রাপল হেলিক্স পদ্ধতির- বাস্তব প্রতিফলন ঘটায়, যেখানে সরকার, একাডেমিয়া, বেসরকারি খাত এবং সিভিল সোসাইটি একসঙ্গে কাজ করে।
এই সামিট প্রমাণ করেছে—টেকসই উন্নয়ন কেবল শেখানোর বিষয় নয়; এটি হতে হবে একসাথে গড়া, অনুভব করা ও বাস্তবায়নযোগ্য এক অভিজ্ঞতা।
বিডি প্রতিদিন/এএ