বিগত আট বছর ধরে প্রায় পনেরো লক্ষ রোহিঙ্গা শরণার্থীর চাপে বাংলাদেশের দক্ষিণ–পূর্ব উপকূল এক অস্থির বাস্তবতায় যখন নিক্ষিপ্ত, যখন নিরাপত্তা হুমকি, মাদক–মানবপাচার, বন উজাড় ও পাহাড় ধস, জেলেদের জীবিকা সংকট, স্থানীয় বাজারে মজুরি ওপণ্যের চাপে ঐ অঞ্চলের স্থানীয় মানুষ দিশেহারা, তখন রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য টেকসই সমাধান পেতে, তাদের নিরাপদ, স্বেচ্ছা ও মর্যাদাসম্পন্ন প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সিদ্ধান্তে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ নিউ ইয়র্কের সদর দফতরে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে “রোহিঙ্গা মুসলমান ও মায়ানমারের অন্যান্য সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি” বিষয়ে উচ্চপর্যায়ের সম্মেলন।
এর উদ্দেশ্য তিনটি, এই সংকটে আন্তর্জাতিক মনোযোগ বজায় রাখা; মূল কারণ শনাক্ত করে রাজনৈতিক সমাধানের রূপরেখা তৈরি; এবং মানবাধিকার, নিরাপত্তা ও উন্নয়নকে একসুতোয় গেঁথে বাস্তবায়নযোগ্য রোডম্যাপ নির্ধারণ। সদস্য রাষ্ট্র, প্রাসঙ্গিক আঞ্চলিক সংস্থা ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার এবং মানবিক সংস্থার অংশগ্রহণে নিঃসন্দেহেই এটি আকারে ও আকৃতিতে বড় পরিসরের বৈশ্বিক সমাবেশ।
হতাশার গভীর অন্ধকারেও এটিকে আশার আলো হিসেব বিবেচনায় নিতে ইচ্ছে করে। বাংলাদেশ সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান কূটনীতিকদের ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন, “একসময় ইস্যুটি বৈশ্বিক এজেন্ডা থেকে প্রায় হারিয়ে যাচ্ছিল।” তিনি আরও বলেন, গত বছর জাতিসংঘ মঞ্চে বাংলাদেশের আহ্বানের পর ১০৬টি দেশ সম্মেলনের পক্ষে স্পন্সর করে এবং মূল সম্মেলনে রোহিঙ্গাদের “ভয়েস” বহন করার আয়োজন নেওয়া হচ্ছে। এ সবই রাজনৈতিক সমর্থন সঞ্চয়ের ইঙ্গিত। “ তিনি যখন ব্রিফিং করছিলেন, তখন যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ ৫০টি মিশনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এতে করে মনে হতে পারে এ সকল দেশগুলো রোহিঙ্গা শরণার্থী প্রত্যাবর্তনে মিয়ানমারকে যথাযথ চাপ প্রয়োগ করতে জাতিসংঘের সম্মেলনকে একটি বাস্তব মাত্রা হিসেবে ধরে নেবে।
কিন্তু এটা তো ঠিক, বাস্তবতার মাটি নরম, এবং ভঙ্গুর। এই চলমান সময়ে জাতিসংঘের কাঠামোগত সীমাবদ্ধতা রয়েছে বলেই প্রতিষ্ঠিত। কেননা অতীতে বিশেষত নিরাপত্তা পরিষদের ভেটো রাজনীতি, প্রতিটি মানবিক সংকট মোকাবেলার সিদ্ধান্তগত স্তরে বাধা কেবল বিস্ময়েরই জন্ম দেয়নি, বৃহৎ শক্তির দেশগুলোর মানবতা আর গণতন্ত্রের শ্লোগান অপসৃত হয়েছে। কী দেখছে বিশ্ব এখন? গাজায় গণহত্যা থামাতে ইসরাইলকে কথা শোনাতে জাতিসংঘ পারেনি; অথবা, রাশিয়া ওইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে তাদের প্রবল অক্ষমতা। সেই হতাশার কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে মাথায় রাখতে হবে, রোহিঙ্গা সংকটেও সেসব সতর্ক সংকেত। জাতিসংঘ থেকে নেয়া নীতিগত নিন্দা, বিশেষ দূত নিয়োগ, অনুসন্ধান কমিশন, এসব দরকারি হলেও রোহিঙ্গা শরণার্থী প্রত্যাবর্তনে “মাঠের” শর্ত, নাগরিকত্ব, নিরাপত্তা, ভূমি–বাড়ি ফেরত, গণহত্যায় দায়ীদের জবাবদিহি করা নিশ্চিত না হলে রোহিঙ্গারা নিজ ইচ্ছায় ফিরবে কেন কিংবা কিভাবে ফিরবে? আবার, বলপ্রয়োগ বা শান্তিরক্ষী মোতায়েনের মতো কঠোর পদক্ষেপে পৌঁছাতে চাইলে ভেটো রাজনীতির ফাঁদেই পড়তে হয়, জানা কথা।
রোহিঙ্গা শরণার্থীদেরকে তাদের জন্মভূমিতে ফেরত পাঠাতে মিয়ানারকে যতদিক থেকে যত বলা হোউক না কেনো, তারা যেনো, বলতে চায়,-কলঙ্ক আমার ভালো লাগে।”
এমন পরিস্থিতিতে দেখা দরকার, এ সাহস তারা পায় কেনো, কি করে পায়? সেখানেই ভূ–রাজনীতির অঙ্ক নির্ণয় জরুরি। সেটা হলো, মায়ানমারের সীমান্ত ঘেঁষে থাকা চিনের সবচেয়ে বড় কৌশলগত ও অর্থনৈতিক প্রভাব জ্বালানি পাইপলাইন, অর্থায়ন, করিডর ও অবকাঠামো বিনিয়োগে সুবিশাল করে গ্রন্থিত। এজন্যে মায়ানমারের বিপক্ষে বেইজিং সরাসরি কঠোর নিষেধাজ্ঞার পক্ষে সচরাচর যায় না। অথচ তারা এখানে স্থিতিশীলতার স্বার্থে “রেসপনসিবল স্টেবিলিটি” ধারায় প্রভাব খাটাতে সক্ষম। অন্যদিকে ভারত তার যৌথ সীমান্ত রেখায় থেকে সীমান্ত নিরাপত্তা ও উত্তর-পূর্ব ভারতের সাতটি প্রদেশের নিরাপত্তা ও ভূ-রাজনৈতিক ভারসাম্যকে অগ্রাধিকার দিবে, এটা মাঠের বাস্তবতা। আর এজন্যে তারা প্রচলিত ধারায় মিয়ানমারের সাথে ব্যালান্স নীতিতে চলে। ভুললে চলবে না, শেখ হাসিনার ক্ষমতাকালেও ভারত এ নিয়ে কোনো গভীর চাপ মিয়ানমারকে দেয়নি।
অন্যদিকে পশ্চিমা শক্তি,-যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য, কানাডার কি খবর? তারা আসলে তাদের কূটনৈতিক হিসেব থেকে নির্ণয় করে তাদের স্বার্থ। খুব জোর তারা আর্থিক প্রবাহে নিয়ন্ত্রণ, এবং কূটনৈতিক বিচ্ছিন্নতার চাপ দিতে আগ্রহী হয়; যদিও এখানে এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিন্ন সিদ্ধান্তে, তা বোঝাই যায়। এই প্রেক্ষিতে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে মার্কিন নিরাপত্তা হিসেবের খাতা মেলে চীন ও রাশিয়ার ছায়া দেয় মায়ানমারকে।
মিয়ানমারের সাথে রাশিয়ার অস্ত্র বাণিজ্য রমরমা। পশ্চিমা বিশ্বের চাপে দীর্ঘদিন ধরে মিয়ানমার আইসোলেশোনিষ্ট পররাষ্ট্র নীতি নিয়ে বজায় রেখেছে বলে পশ্চিমা বিশ্ব বিরোধী শক্তি রাশিয়া কদর করে তাকে। সুতরাং, চীন, রাশিয়ার মিষ্টি ছায়ায় নায়েপিদো ঘাড়ে হাত দেয়া পশ্চিমা শক্তির পক্ষে সম্ভব হয়নি। চীন, রাশিয়া ও ভারত-এই ত্রিভুজের কূটনৈতিক খেলাটার এমন রূঢ় সমীকরণকে কৌশলী হয়েই মোকাবিলা করতে হবে।
তাহলে বাংলাদেশ কোথায় যাবে, কার কাছে সহায়তা পাবে? আমাদের দেশে অনেক প্রবীণ বুদ্ধিজীবি এবং অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তারা মত প্রকাশ করছেন, রোহিঙ্গা শরণার্থী প্রত্যাবর্তনে বাংলাদেশর জন্যে উপযুক্ত অত্যাধুনিক সামরিক প্রস্ততিই সমাধানের পথ। এই বক্তব্যকে যদি বিশ্লষণে রূপান্তরিত করা যায়, তবে ধারণা করা যেতে পারে তারা যুদ্ধের ইঙ্গিত দিচ্ছেন। কিন্তু এটা কি ভুললে চলবে, যে কোনো যুদ্ধে কোল্যাটারাল ড্যামেজ অর্থাৎ উভয়দিকে ক্ষয়ক্ষতির একটি সামরিক ভাষা আছে! ধারণা করি, অতি আবেগে সহজ করে ভাবছে, বাংলাদেশ পটাপট মিয়ানমারের পেটের ভিতর রাখাইন স্টেটে ঢুকে পড়ে বিজয় আনবে। কেননা, রাখাইন বিদ্রোহীদের সাথে আমাদের সৈন্যবাহিনী মিশে যাবে অনায়াস বিজয়ে। কিন্তু আমাদের সন্তান, জওয়ানদের অপ্রয়োজনীয় যুদ্ধে প্রাণক্ষয়, - সেটা কে ভাববে? মিয়ানমারের চিন নামক যে প্রদেশ, তার প্রায় ৭০ কিলোমিটার সীমান্ত বাংলাদেশের সাথে এবং মিয়ানমার সেখান দিয়ে সহজেই আঘাত করতে সক্ষম, কেননা, যুদ্ধ সুবিধায় তারা পাহাড়ের উপর দিকে এবং বাংলাদেশ ঢালুতে। একইসাথে মিসাইলে তাদের সুপিরিয়র শক্তি থাকায় আমাদের দেশের যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আঘাত করতেও সক্ষম। এটা কে ভাববে? মিয়ানমারের অতি শক্তিশালি মিসাইল সমূদ্র বন্দর বা রাজধানীতে আছড়ে পড়লে কী দশা হবে সেই ধ্বংস যজ্ঞে ক্রাইসিস ম্যানেজম্যান্টের? কোন আবগে দিয়ে সেসব সামাল দেয়া হবে? মনে আছে, সাভারে রানা প্লাজা ভবন ধ্বসে পড়ার ঘটনা? ঐ এক ধ্বসে যাওয়া ভবন থেকে শ্রমিক উদ্ভারে কী ভয়াবহ অভিজ্ঞতা!
আসলে এই জটিল ভূমিতে বাংলাদেশের কৌশল অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ নয়, ফ্রন্ট খুলতে হবে বহুমুখী কূটনৈতিক যুদ্ধের। প্রথমত, বহুপাক্ষিক প্ল্যাটফর্ম গুলোর নেতৃত্বের সাথে ধারাবাহিকভাবে সহায়ক শক্তি গড়া। কক্সবাজার সংলাপের মেসেজকে নিউ ইয়র্কে সুসংগঠিত এজেন্ডায় রূপ দেওয়া, এবং সম্মেলন পরবর্তী “ফলো-আপ আরকিটেকচার” নিশ্চিত করা; যাতে করে ঘোষণাপত্র কাগজে না আটকে যায়। দ্বিতীয়ত, দুই প্রতিবেশী দেশ চিন ও ভারতের সাথে কৌশলগত সংলাপ পুনরায় চালু করা। চীনের অর্থনৈতিক স্বার্থকে “স্টেবিলিটি ডিভিডেন্ড” এ পরিণত করা (স্থিতিশীল রাখাই তাদের বিনিয়োগের স্বার্থ); আর ভারতের সঙ্গে সীমান্ত নিরাপত্তা, বিদ্রোহী গোষ্ঠী, ট্রান্স-ন্যাশনাল ক্রাইমের যৌথ উদ্বেগ শেয়ার করে প্রত্যাবর্তনের পক্ষে বাস্তববাদী বোঝাপড়া সৃষ্টি করা। তৃতীয়ত, আইনি পথে চাপ -ICJ–এ গাম্বিয়ার মামলা ও ICC এর তদন্তে প্রমাণ, তথ্য, সাক্ষ্য জোগানো। রাখাইনে রোহিঙ্গা গণহত্যায় দায়ীদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা। চতুর্থত, শর্তাধীন প্রত্যাবর্তন, নাগরিকত্ব ও আইডেন্টিটি, ডকুমেন্ট, ভূমি–বাড়ি ফেরত বা ক্ষতিপূরণ, স্থানীয় নিরাপত্তা বন্দোবস্ত, আন্তর্জাতিক মনিটরিং, -এসব ছাড়া প্রত্যাবর্তন নয়; “নিরাপত্তা আগে, রিটার্ন পরে”- এ সূত্র আঁকড়ে ধরা। পঞ্চমত, দাতা গোষ্ঠীর কনসোর্টিয়াম পুনর্গঠন ও পুনর্বাসনের জন্য বহুদাতা তহবিল গঠন; বহিবিশ্ব থেকে মায়ানমারকে তহবিল ছাড়ের পদ্ধতিকে “ফেজড রিটার্ন” ও “ভেরিফাইড কমপ্লায়েন্স” এর সঙ্গে জুড়ে দেওয়া; অর্থাৎ মায়ানমার নির্দিষ্ট শর্ত মানলে তবেই ধাপে ধাপে সহায়তা ছাড়। ষষ্ঠত, দীর্ঘমেয়াদি প্রস্তুতি রাখা, যেনো প্রত্যাবর্তন বিলম্বিত হলে ক্যাম্পে শিক্ষা-স্বাস্থ্য-উপার্জনের সুযোগ বাড়ানো। স্থানীয়দের ক্ষোভ কমাতে কমিউনিটি বেনিফিট প্রজেক্ট, এবং সীমান্ত আইনশৃঙ্খলায় মায়ানমারে সাথে সমন্বিত জিরো টলারেন্স।
বাংলাদেশের জন্য আরেকটি জরুরি ট্র্যাক হলো রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কণ্ঠস্বর নীতিনির্ধারণী স্তরে তোলা। তারা জাতিসংঘের সদস্য না হলেও, তাদের প্রতিনিধিত্বের সৃজনশীল ব্যবস্থা দরকার। ডায়াসপোরা লিডার, নারী-যুব-কমিউনিটি প্রতিনিধির সাক্ষ্য সম্মেলনে সাইড ইভেন্টে উপস্থাপন। প্রত্যাবর্তনের “ফ্রি অ্যান্ড ইনফর্মড চয়েস” নিশ্চিতের জন্য স্বাধীন লিগ্যাল-এইড ও কাউন্সেলিং এবং ক্যাম্প-টু-কমিউনিটি “ট্রাস্ট–বিল্ডিং” প্রোগ্রাম। এতে করে এই রোডম্যাপ কেবল কূটনৈতিক দলিল নয়, মানুষের জীবনের সঙ্গে সংযুক্ত হবে।
সবমিলিয়ে বলা দরকার, বাংলাদেশের কূটনীতিকে “মাইক্রো ডিজাইন”এ নামতে হবে। মিয়ানমারের কোন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কোন শর্তে চুক্তি, কোন জেলার কোন টাউনশিপে প্রথম পাইলট প্রজেক্টের অধিনে শরনার্থী পাঠানো, কোথায় পর্যবেক্ষক বসবে, নিরাপত্তা ঘটনার রিপোর্টিং চ্যানেল কী, ভূমি বিতর্ক হলে সালিশ কারা করবে,-এসব সূক্ষ্ম প্রশ্নের উত্তর এখনই খসড়া করা দরকার। একই সঙ্গে পশ্চিমা অংশীদারদের সঙ্গে “কমপ্লায়েন্স-লিঙ্কড ফিন্যান্স” আর পূর্বের অংশীদারদের সঙ্গে “স্ট্যাবিলিটি লিঙ্কড ইনসেন্টিভ” - দুই যৌক্তিক পথেই কাজ করতে হবে। নাহলে এক পক্ষের চাপ আরেক পক্ষের ছায়ায় নিস্প্রভ হয়ে যাবে।
সবশেষে, কক্সবাজার, টেকনাফের পাহাড়ি, ও সমতলের স্থানীয় পরিবারগুলোর নিরাপত্তা ও জীবিকার স্থিতিশীলতা নির্মাণ করা। সেই সুরেই যুক্ত করি, নিপীড়নের শিকার রোহিঙ্গাদের দায়িত্ব নয় ভূ–রাজনীতির জটিল বোঝা টানার। সেজন্যে বিশ্বাস করতে পছন্দ করবো, নিউ ইয়র্কের সম্মেলন যদি একটি সম্মিলিত ও সময়সীমাবদ্ধ রোডম্যাপ তৈরী করে আঞ্চলিক শক্তির স্বার্থকে যৌক্তিক সমীকরণকে বাস্তবতায় বেঁধে, তবেই আশার আলো ফুটে রোহিঙ্গা শরণার্থী সমাধানের পথ ক্রমে অবারিত হতে পারে।
লেখক: রাজনৈতিক বিশ্লেষক, কবি ও কথাসাহিত্যিক
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন