সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন বলেছেন, এস আলম একাই পুরো ব্যাংক খাত ধ্বংস করে দিয়েছেন। একজন মাত্র ব্যক্তি যেমন একটি ব্যাংক ধ্বংস করে দিতে পারে। উল্টোভাবে এক-দুজন সৎ পরিচালকও একটি ব্যাংকের সফলতার জন্য যথেষ্ট। গতকাল ‘ব্যাংক খাতের সংকট, সংস্কার ও নিয়ন্ত্রণ’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয় (ইউএপি) ও জার্মানির ওটিএইচ অ্যামবার্গ-ওয়েইডেন যৌথভাবে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। এ সময় মূল প্রবন্ধে একটি খসড়া গবেষণাপত্র উপস্থাপনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন মাহমুদ ওসমান ইমাম। পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী ও ব্যাংক এশিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোহেল আর কে হোসেন বক্তব্য দেন। উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্র ও ব্যাংক খাতের সংশ্লিষ্টরা।
মাসরুর আরেফিন বলেন, দেশের ব্যাংক খাতে মোট ঋণের পরিমাণ ১৮ লাখ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রায় ১১ লাখ কোটি টাকা সমস্যাপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। বাংলাদেশে বর্তমানে ব্যাংকের সংখ্যা ৬০টি। বিদেশি ব্যাংক বাদ দিয়ে স্থানীয় ব্যাংক রয়েছে ৫০টি। এর মধ্যে কমবেশি ৪০টি ব্যাংক মানসম্মত নয়। প্রায় ১৫টি ব্যাংককে বলা হচ্ছে ‘জম্বি ব্যাংক’। এসব ব্যাংকের অর্ধেকেই লুটপাট হয়েছে। তিনি বলেন, ব্যাংক কোম্পানি আইনের খসড়ায় ৫০ শতাংশ স্বতন্ত্র পরিচালক থাকার কথা বলা হয়েছে। ভালো ব্যাংকেও কেন এ নিয়ম মানতে হবে? নতুন খসড়ায় আরও বলা হয়, একটি পরিবার একটি ব্যাংকে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ পর্যন্ত শেয়ার রাখতে পারবে। তবে পরিবারের সংজ্ঞায় বিভিন্ন ধরনের আত্মীয়স্বজনকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বাস্তবে দেশের ব্যাংক খাতে বড় লুটপাট হয়েছে বেনামে, বৈধ শেয়ার মালিকানার কারণে নয়।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনায় মাহমুদ ওসমান ইমাম বলেন, আর্থিক খাত সংস্কার জটিল ও ব্যয়বহুল। দেশে যেমন কয়েকটি ভালো ব্যাংক আছে, আবার জম্বি ব্যাংক আছে। এসব জম্বি ব্যাংকে খেলাপি ঋণের হার মোট বিতরণ করা ঋণের ৯০ শতাংশের ওপরে। দেশের ব্যাংক খাত সংস্কারে বাংলাদেশ ব্যাংককে কার্যকর স্বাধীনতা দিতে হবে।