শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের ছয় সদস্যের বিরুদ্ধে পূূর্বাচলে প্লট দুর্নীতির ছয় মামলার রায় এ মাসেই। এসব মামলার পাঁচটিতেই এখন সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামিপক্ষের আত্মপক্ষ সমর্থন ও যুক্তিতর্কের জন্য আজ দিন ধার্য আছে। একটি মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ পর্যায়ে। এর মধ্য তিনটি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক মো. আবদুল্লাহ আল মামুনের এবং বাকি তিনটি বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক মো. রবিউল ইসলামের আদালতে বিচারাধীন। আজই কয়েকটি মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণা হতে পারে, এমনটি জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ।
দুদকের পাবলিক প্রসিকিউট মো. তরিকুল ইসলাম জানান, ‘এসব মামলা সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আত্মপক্ষ সমর্থন ও যুক্তিতর্কের জন্য আছে। আশা করছি এ মাসের শেষ দিনেই রায় ঘোষণা করা হবে।’
মামলায় সাক্ষীদের জবানবন্দি থেকে জানা গেছে, রাজউকের প্লট পেতে নিজেদের ভাসমান, অসহায় ও গরিব বলে পরিচয় দেন সজীব ওয়াজেদ জয় ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। স্বামী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার মৃত্যুর পর ধানমন্ডির সুধাসদনের বসতবাড়ির সম্পত্তি থেকে নিজ অংশ বুঝে নেন শেখ হাসিনা। পরে সেই সম্পত্তি দুই সন্তান জয় ও পুতুলকে হেবা (দান) করেন তিনি। ঢাকা শহরে সম্পত্তি থাকা সত্ত্বেও নিজেদের নামে সম্পত্তি নেই উল্লেখ করে মিথ্যা তথ্য দিয়ে রাজউক থেকে প্লট বরাদ্দ নেন শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা। একইভাবে শেখ রেহানা, টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি ও আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তীও রাজউকের প্লট পেতে নিজেদের ভাসমান, অসহায় ও গরিব পরিচয়ে মিথ্যা হলফনামা দিয়েছিলেন। রাজউক কর্মকর্তার সাক্ষ্য অনুযায়ী, তাঁদের একাধিক প্লট-বাড়ি রয়েছে। এসব মামলায় শেখ হাসিনা পরিবারের সাত সদস্য ছাড়াও রাজউক ও সরকারের ২১ কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়েছে। যাঁদের সহযোগিতায় পূর্বাচলে প্লট দুর্নীতি হয়েছে। আসামিরা কেউ বিদেশে, কেউ পলাতক থাকায় এবং তাঁদের পক্ষে আইনজীবী না থাকায় সাক্ষীদের জেরা বাদ দিয়েই সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। মাত্র একজন আসামি রাজউক কর্মকর্তা খোরশেদ আলম ট্রায়াল ফেস করছেন। তাঁর আইনজীবী শাহিনুর ইসলাম রায়ের বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি। রাষ্ট্রপক্ষ বলছে, যে ধারায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, তাতে দোষী প্রমাণিত হলে সর্বনিম্ন চার বছর থেকে সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে।
দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ বলেন, ‘সাক্ষীদের জবানবন্দিতে আসামিদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ উঠে এসেছে। ন্যায়বিচারের স্বার্থে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হবে বলে প্রত্যাশা করছি।’