অকাল প্রয়াত কবি, গবেষক, প্রাবন্ধিক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. হিমেল বরকতের পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে শনিবার বাগেরহাটের মোংলায় রুদ্র স্মৃতি সংসদ, নাগরিক সমাজ ও মিঠাখালী সিদ্দিক বাজার বণিক সমিতিসহ বিভিন্ন রাজনৈক দল ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের আয়োজনে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
শনিবার সকাল ৯টায় মিঠাখালীতে রুদ্র স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে সংসদ চত্বর থেকে শোভাযাত্রা সহকারে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের মানুষ কবির সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর হিমেলের বাড়িতে দোয়া, মিষ্টি বিতরণ করা ও স্মরণানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। স্মরণানুষ্ঠানে রুদ্র স্মৃতি সংসদের সভাপতি সাংবাদিক সুমেল সারাফাত'র সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন মোংলা নাগরিক সমাজের সভাপতি নুর আলম শেখ, মোংলা বন্দর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক আফজাল হোসেন, রুদ্র স্মৃতি সংসদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক, কবির বাল্যবন্ধু জানে আলম বাবু, রুদ্র স্মৃতি সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান টিটো প্রমুখ। আলোচনা শেষে হিমেল বরকতের লেখা গান পরিবেশন করে অন্তর বাজাও শিল্পী গোষ্ঠী।
সভায় বক্তারা বলেন, হিমেল বরকত ছিলেন একাধারে অধ্যাপক, খ্যাতিমান কবি, প্রাবন্ধিক, গীতিকার ও সাহিত্য গবেষক। তার লেখায় সমাজের সকল বৈষম্য আর অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছেন। মাত্র ৪৩ বছর বয়সেই তিনি বাংলা সাহিত্যাংগনে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছিলেন।
হিমেল বরকতের প্রকাশিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে চোখে চৌদিকে (২০০১), দশ মাতৃক দৃশ্যাবলি (২০১৪), ব্রাত্যভাবনা (২০১৭), সাহিত্য সমালোচক বুদ্ধদেব বসু গবেষণা গ্রন্থ (২০১৩), ছড়ায় ছড়ায় প্রকৃতির বিস্ময়, ছোট গল্প আয়না, পেনসিল ও রাবারের গল্প। হিমেল বরকত সম্পাদিত গ্রন্থগুলো হলো রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ রচনাবলী (২০০৫), কবি ত্রিদিব দস্তিদারের কবিতা সমগ্র (২০০৫), চন্দ্রাবতীর রামায়ণ ও প্রাসঙ্গিক পাঠ (২০১২), রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর শ্রেষ্ঠ কবিতা (২০১২), বাংলাদেশের আদিবাসী কাব্য সংগ্রহ (২০১৩), রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ স্মারক গ্রন্থ (২০১৫) ও রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর প্রেমের কবিতা নিয়ে অনুকাব্য। এ ছাড়া অপ্রকাশিত রয়েছে হিমেলের বেশ কিছু কবিতার বই ও গান।
প্রসঙ্গত, প্রয়াত কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর ছোট ভাই কবি ড. হিমেল বরকত ১৯৭৭ সালের ২৭ জুলাই বাগেরহাটের মোংলার মিঠেখালী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ২০২০ সালের ২২ নভেম্বর ঢাকায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। পড়াশুনা পরবর্তী ২০০৬ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে যোগ দিয়ে ২০১৮ সালের ৫ জুন অধ্যাপক হন। মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত এখানেই তিনি কর্মরত ছিলেন।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল