নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে গত শুক্রবারের ভূমিকম্পে দেয়াল চাপায় নিহত ১০ মাস বয়সী শিশু ফাতেমার দাফন সম্পন্ন হয়েছে শুক্রবার বিকেলে। তবে গুরুতর আহত স্ত্রী কুলসুম বেগমের চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত থাকায় ফাতেমার বাবা আব্দুল হক দাফন-কাফন ও সন্তানের শেষ বিদায়ে উপস্থিত থাকতে পারেননি। এ হৃদয়বিদারক ঘটনায় এলাকায় নেমে এসেছে গভীর শোক।
স্থানীয় সূত্র জানায়, শুক্রবার সকালে কুলসুম বেগম শিশু ফাতেমাকে নিয়ে ভুলতা এলাকায় বাবা–বাড়ির উদ্দেশে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে হঠাৎ ভূমিকম্পের কম্পনে রাস্তার পাশে একটি উঁচু বাউন্ডারি দেয়াল ভেঙে পড়ে তাদের ওপর। এতে ঘটনাস্থলেই শিশু ফাতেমা নিহত হয় এবং মা কুলসুম গুরুতর আহত হন।
আহত কুলসুমকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হলেও জায়গা না পেয়ে একের পর এক ঢাকা শহরের বিভিন্ন চিকিৎসাকেন্দ্রে ঘুরতে হয়। পরে তাকে ঢাকা ন্যাশনাল হাসপাতালে ভর্তি করা সম্ভব হয়। স্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে ছুটতে থাকায় মেয়ের জানাজা ও দাফন ‘একনজর দেখা’ পর্যন্ত সম্ভব হয়নি আব্দুল হকের।
আব্দুল হক কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, প্রাণের টুকরারে দাফন করার সময় একবারও দেখতে পারলাম না। কোলে নিতে পারলাম না। আল্লাহ, এমন দিন যেন কোনো বাবার ভাগ্যে না আসে।
প্রতিবেশী তুহিন মিয়া বলেন, আব্দুল হক স্বপ্ন দেখতেন দুই মেয়েকে মানুষ করবেন, ডাক্তার বানাবেন—গরিবের বিনা পয়সায় চিকিৎসা করবে। কিন্তু ছোট্ট ফাতেমার সেই স্বপ্ন পূরণ তো দূরের কথা, চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার সুযোগও হলো না।
শুক্রবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন রূপগঞ্জ ইউএনও সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, উপজেলায় বহু ভবন ও প্রাচীর নিয়ম না মেনে নির্মিত হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এসব স্থাপনা ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হবে।
উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ফাতেমার দাফনের জন্য পরিবারকে ২০ হাজার টাকা সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল