শতকোটি টাকার গাড়ি এখন ভাঙারির স্তূপে পরিণত হয়েছে। ঢাকা মেট্রো খ-১১-৮৪০৫ জিপ দেখলে কঙ্কাল মনে হবে। অযত্ন, অবহেলায় এসব গাড়ি নষ্ট হলেও দায় নেই কারও। অপচয় হচ্ছে রাষ্ট্রের টাকার। নষ্ট হচ্ছে সরকারি গাড়ি।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের চাহিদা অনুযায়ী পরিবহনের সংকট রয়েছে। বিভিন্ন প্রকল্পের গাড়ি প্রকল্প শেষে পরিবহন পুলের অনুমতি নিয়ে ব্যবহার করা হচ্ছে। ২৫-৩০ বছরের পুরোনো গাড়ি মেরামতের মাধ্যমে সচল করা হলেও বর্তমানে সেগুলো আর ব্যবহার করা যাচ্ছে না। মেরামত অযোগ্য গাড়িগুলোর নিলামের জন্য প্রপোজাল পাঠানো হয়েছে। জটিল প্রক্রিয়ার কারণে তা করা যাচ্ছে না।
সরেজমিন রাজধানীর ফার্মগেট খামারবাড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে ঢুকতেই দেখা যায় কার, জিপ, পাজেরোসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের গাড়ি খোলা আকাশের নিচে পড়ে আছে। রোদ-বৃষ্টি-ঝড় আর ধুলায় এসব গাড়ির যন্ত্রাংশে মরিচা ধরেছে। কোনো কোনো গাড়ি মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। কার, জিপের মতো অন্তত ৭০টি গাড়ি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে থাকতে দেখা গেলেও এর প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সরকারি বিধি অনুযায়ী, উন্নয়ন প্রকল্প থেকে প্রাপ্ত যানবাহন প্রকল্প শেষের ৬০ দিনের মধ্যে সরকারি পরিবহন পুলে জমা দিতে হয়। অভিযোগ উঠেছে, নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ৩০ বছর ধরে প্রকল্প থেকে প্রাপ্ত গাড়িগুলো পরিবহন পুলে জমা না দিয়ে তা ব্যবহার করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যানুসারে, নামিদামি ব্র্যান্ডের ১২০টি গাড়ি রয়েছে। এর মধ্যে ৫ কোটি টাকার ১৩টি জিপ মেরামতের অযোগ্য, ৩৬টি গাড়ির ইঞ্জিন ও ১৩টি গাড়ির চাকা উধাও এবং অন্তত ৬৪টি গাড়ির বডি অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে।
এ ব্যাপারে কথা বলতে অধিদপ্তরের ডিজি এস এম সোহরাব উদ্দিনকে না পেয়ে প্রটোকল অফিসার আমিনুর রহমান খানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘বেশির ভাগ গাড়ি ৩০ থেকে ৪০ বছর আগের। কোনো কোনোটির বয়স ৫০ বছর। এর মধ্যে জাতিসংঘের কিছু গাড়িও আছে। এগুলো বিক্রি করতে হলে মালিকানা পরিবর্তন জরুরি। এ ছাড়া বিভিন্ন জটিল প্রক্রিয়ার কারণে গাড়িগুলো দীর্ঘদিন থেকে পড়ে আছে।’