স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এতদিন যেমন ছিল, তার থেকে সাম্প্রতিক সময়ে কিছুটা খারাপের দিকে গেছে। আমরা চেষ্টা করছি, যাতে দ্রুতই আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা যায়। তিনি বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের আসন্ন দুর্গাপূজায় অস্থিরতা সৃষ্টির পাঁয়তারা চলছে। গত বছরের ন্যায় এ বছর সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে। গতকাল সকালে রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে নির্বাচনি প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. নাসিমুল গণি। স্বাগত বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত আইজি (এইচআরএম) আবু নাছের মোহাম্মদ খালেদ।
গত শুক্রবার রাজবাড়ীতে কবর থেকে লাশ তুলে পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় অস্থিতিশীল পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, রাজবাড়ীর ঘটনা আমরা তদন্ত করে দেখছি। পাঁচজনকে ইতোমধ্যে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। তদন্ত শেষ হলে পুরো বিষয়টি স্পষ্ট হবে। আরেক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, সমাজে ধৈর্যের অভাব তৈরি হয়েছে। সবাইকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানাচ্ছি।
পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনারা ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচন মাথা থেকে মুছে ফেলবেন। আরেকটি অনুরোধ, আপনারা সমাজ থেকে দুর্নীতি এবং মাদক কমাতে পারেন কি না। যদি সহযোগিতা করেন, এটা আমরা সমাজ থেকে কমাতে পারব। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলের নেতাদের তেলবাজি না করে জনগণের আশা-আকাক্সক্ষা পূরণে চেষ্টা করবেন।’
খোদা বখস চৌধুরী বলেন, জুলাই-আগস্টের পর পুলিশে কতটা পরিবর্তন এসেছে তার প্রমাণ হবে আগামী জাতীয় নির্বাচন। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, সবার সম্মিলিত চেষ্টায় আমরা প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণা অনুযায়ী নির্বাচন উৎসবমুখর অবস্থায় নিয়ে যেতে পারব।
মো. নাসিমুল গণি বলেন, দেশকে উৎসবমুখর নিরাপদ নির্বাচন উপহার দেওয়া, জনগণকে নিরাপদ রাখা এবং পুলিশের হারিয়ে যাওয়া সম্মান পুনরুদ্ধার করা পুলিশের দায়িত্ব।
আইজিপি বাহারুল আলম বলেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন কেবল ভোট গ্রহণের প্রক্রিয়া নয়; বরং জনগণের বিশ্বাসের প্রতিফলন। এই নির্বাচনে নিরাপত্তা দেওয়া এবং সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানে সহযোগিতা করা পুলিশের জন্য একটি ‘ঐতিহাসিক পরীক্ষা’। এ মুহূর্তে আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো জাতীয় নির্বাচন। এটি শুধু ক্ষমতার পালাবদল নয়, গণতন্ত্রের শেকড়কে আরও মহিমান্বিত করার সুযোগ।