মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আলোচনার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো।
মাদুরোর বিরুদ্ধে মাদক পাচার সংক্রান্ত যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগকে প্রত্যাখ্যান করে রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত এক চিঠিতে তিনি এ আহ্বান জানান।
কারাকাস থেকে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি এক প্রতিবেদনে জানায়, ভেনেজুয়েলার উপকূলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন এবং ভেনেজুয়েলা-ভিত্তিক নৌযানগুলোতে মাদক বহনের অভিযোগে ৬ সেপ্টেম্বর প্রথম হামলা চালানোর ক’দিন পরে ট্রাম্পকে সম্বোধন করা চিঠিটি পাঠানো হয়। ওই সব নৌযান এ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি হামলা চালানো হয়েছে।
প্রথম হামলায় ১১ জন নিহত হওয়ার পর মাদুরোর শান্তির আবেদন সম্বলিত চিঠি সত্ত্বেও আরও দু’টি হামলা চালানো হয়েছে।
২০২৪ সালের জুলাই মাসে মাদুরোর পুনর্নির্বাচনকে বিরোধী দল ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বেশিরভাগ দেশই জালিয়াতি হিসেবে দেখে। মাদুরোর ওপর একটি মাদক চক্রের নেতৃত্ব দেওয়ার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগকে তিনি ‘একেবারে মিথ্যা’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘এটি আমাদের দেশের বিরুদ্ধে সবচেয়ে মিথ্যা খবর, যা একটি সশস্ত্র সংঘাতের উত্থানের লক্ষ্যে ক্রমবর্ধমানভাবে প্রচার করা শুরু হয়েছে। এটি সমগ্র মহাদেশের জন্যও ভয়াবহ ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।’
ট্রাম্পকে ‘আলোচনা ও বোঝাপড়ার মাধ্যমে শান্তি বজায় রাখায়’ আহ্বান জানিয়েছেন মাদুরো।
চিঠিটি পাঠানোর পর থেকে, ক্যারিবীয় অঞ্চলে ভেনেজুয়েলার কাছে ও উত্তরে, ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের উপকূলে মার্কিন বাহিনী আরও দু’টি নৌযানে হামলা চালিয়েছে।
সেগুলোতে মাদক বহন করা হচ্ছিল বলে ওয়াশিংটন অভিযোগ আনে। শেষ হামলাটি প্রথম শুক্রবার ট্রাম্প নিজেই ঘোষণা করেন। তবে এটি কোথায় ঘটেছে, সে ব্যাপারে তিনি স্পষ্টভাবে কিছু বলেননি।
রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের মাদক প্রয়োগকারী সংস্থা ও সেখানকার মার্কিন দূতাবাস হামলাটি নিশ্চিত করেছে। ওই হামলায় তিনজন নিহত হয়।
লাতিন আমেরিকায় মার্কিন সামরিক মোতায়েনের ব্যাপক নিন্দা করা হয়েছে। এতে করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলায় হামলার পরিকল্পনা করছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ভেনেজুয়েলার উপকূলের দক্ষিণ ক্যারিবিয়ানে আটটি যুদ্ধজাহাজ ও একটি পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন পাঠানো হয়েছে ও ১০টি যুদ্ধবিমান নিকটবর্তী পুয়ের্তো রিকোতে পাঠানো হয়েছে। এই মোতায়েনের ফলে হত্যাকাণ্ডের বৈধতা নিয়েও বিতর্ক শুরু হয়েছে। কারণ মার্কিন আইন অনুসারে, মাদক পাচার মৃত্যুদণ্ডযোগ্য অপরাধ নয়।
মাদকবিরোধী অভিযানের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া জাহাজ জব্দ ও সেগুলোর ক্রুদের গ্রেফতার করার পরিবর্তে যুক্তরাষ্ট্র হামলা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে।
সূত্র : এএফপি।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত