আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজায় ফটিকছড়ি উপজেলায় ১২৭টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে ফটিকছড়ি থানায় রয়েছে ৬৭টি এবং ভূজপুর থানায় ৬০টি পূজামণ্ডপ। মণ্ডপে মণ্ডপে চলছে সাজসজ্জা ও প্রতিমা তৈরির চূড়ান্ত কাজ। কারিগররা খড়, কাঠ, সুতা ও মাটি দিয়ে নিপুণ হাতে গড়ে তুলছেন দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, গণেশ, কার্তিক ও অসুরের প্রতিমা। কোথাও চলছে মূর্তি গড়ার কাজ, আবার কোথাও রঙের আঁচড়ে প্রাণ সঞ্চারের প্রস্তুতি।
এদিকে আসন্ন পূজা উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসন নিয়েছে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। প্রস্তুতিমূলক সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, স্ট্রাইকিং ফোর্সের পাশাপাশি গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করা হবে। সীমান্তবর্তী পূজামণ্ডপগুলোতে বিজিবি মোতায়েন থাকবে, দুই থানায় দুটি সেনা টহল দল কাজ করবে। পর্যাপ্ত স্বেচ্ছাসেবক ও আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। প্রত্যেক পূজামণ্ডপে প্রতিমার দিকে মুখ করে সিসি ক্যামেরা স্থাপন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
এছাড়া, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার ঠেকাতে মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছে।
সরকারিভাবে উপজেলার প্রতিটি পূজামণ্ডপে ৫০০ কেজি চাল, পৌরসভার প্রতিটি মণ্ডপে ১০ হাজার টাকা এবং ইউনিয়নের পূজামণ্ডপগুলোতে সাধ্যমতো সহায়তা দেবে উপজেলা প্রশাসন।
ফটিকছড়ি উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ধনঞ্জয় দেব নাথ বলেন, “প্রতি বছরের মতো এবারও অত্যন্ত জাঁকজমকপূর্ণভাবে পূজা উদযাপিত হবে। ফটিকছড়িতে হিন্দু-মুসলিমদের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক আছে। মুসলিমরা সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন, তাই সহিংসতার প্রশ্নই আসে না।”
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের চট্টগ্রাম উত্তর জেলা শাখার সদস্য সচিব জুয়েল চক্রবর্তী বলেন, “এবার আগের চেয়ে বেশি আনন্দঘনভাবে পূজা উদযাপন হবে বলে আমি আশাবাদী। প্রশাসনের সঙ্গে আমাদের প্রস্তুতিমূলক বৈঠকে নানা বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।”
ফটিকছড়ি থানার ওসি নুর আহমদ বলেন, “আইনশৃঙ্খলার বিষয়ে কাউকে বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে না। একটি শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পূজা উদযাপনে আমরা বদ্ধপরিকর।”
ভূজপুর থানার ওসি মাহাবুবুল আলম জানান, “ভূজপুরে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সনাতনী ভাইরা পূজা উদযাপন করতে পারবেন—এর জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে।”
ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, “সারা দেশের কী অবস্থা সেটা আমার দেখার বিষয় নয়, আমি দেখাবো ফটিকছড়িতে কী হচ্ছে। আসন্ন দুর্গাপূজাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। শান্তিপূর্ণ ও সুন্দর পরিবেশে পূজা উদযাপনের ব্যাপারে আমরা আশাবাদী।”
বিডি প্রতিদিন/আশিক