ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে আলোচনা করতে আজ দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা অঙ্গরাজ্যের অ্যাঙ্করিজ শহরে এই বৈঠক হবে। তবে বৈঠক থেকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি চুক্তির ঘোষণা আসবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। এদিকে যুদ্ধ অবসানে রাজি না হলে রাশিয়াকে গুরুতর পরিণতি ভোগ করতে হবে হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন বলছে, অ্যাঙ্করিজের একটি সামরিক ঘাঁটিতে বৈঠকটি হবে। ট্রাম্প-পুতিন দুজন আলাদাভাবে বৈঠক করবেন। তারা দুজন ছাড়া বৈঠকে কেউ উপস্থিত থাকবেন না।
বৈঠকের বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, এই বৈঠকে রাশিয়া যদি যুদ্ধ বন্ধ করার বিষয়ে রাজি না হয়, তাহলে এর পরণতি হবে খুবই মারাত্মক। অন্যদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলছেন, যুদ্ধ শেষ করতে ভ্লাদিমির পুতিনের আগ্রহ নেই। তিনি যে মূলত ভান করছেন সে ব্যাপারে ট্রাম্পকে সতর্ক করেছি। তবে আলাস্কায় ট্রাম্প-পুতিনের বৈঠকে রাশিয়ার অবস্থান নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি মস্কো। এদিকে পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে বসার দুই দিন আগে গত বুধবার ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ সময় জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্ৎসসহ যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি, ইইউর প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লিয়েন, ন্যাটোর মহাসচিব মার্ক রুত্তেসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, আলাস্কায় বৈঠকের পর পুতিন যদি যুদ্ধ বন্ধে রাজি না হন, তাহলে রাশিয়া শুল্ক থেকে নিষেধাজ্ঞা পর্যন্ত নানা পরিণতি ভোগ করবে। আমাকে বলে দিতে হবে না। পরিণতি গুরুতর হবে।
এদিকে বৈঠকের পর বার্লিনে জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ মার্ৎসের সঙ্গে এক যৌথ ব্রিফিংয়ে জেলেনস্কি বলেন, পুতিন যে ভান করছেন সেটি আমি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও আমাদের সব ইউরোপীয় সহকর্মীকে জানিয়েছি। আলাস্কার বৈঠকের আগে পুতিন ইউক্রেইন ফ্রন্টের সব অংশে চাপ প্রয়োগের চেষ্টা করছেন। রাশিয়া দেখানোর চেষ্টা করছে তারা পুরো ইউক্রেইন দখলে নিতে পারে। অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি কার্যকরই আলাস্কা বৈঠকের মূল আলোচ্যসূচি হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, যুদ্ধ বন্ধের যে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা, তাতে অবশ্যই ইউক্রেন ও ইউরোপীয় মিত্রদেশগুলোকে যুক্ত করতে হবে। আলাস্কার বৈঠকের আগে আমরা আমাদের সমন্বিত অবস্থান ট্রাম্পকে জানিয়েছি। এ হত্যাযজ্ঞ অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। রাশিয়ার ওপর চাপ দিন। এতে কাজ হবে। শান্তি ফেরাতে এর বিকল্প নেই।