মার্কিন সরকার মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, কম্পিউটার প্রসেসরসহ নানা ইলেকট্রনিক পণ্যকে পাল্টা শুল্কের আওতার বাইরে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ পদক্ষেপ প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আগ্রাসী শুল্ক নীতির কিছুটা শিথিলতার ইঙ্গিত দিচ্ছে। এতে সবচেয়ে বেশি স্বস্তিতে অ্যাপল ও স্যামসাংয়ের মতো বড় বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো, যাদের অনেক পণ্য চীনে তৈরি হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি হয়।
খবর অনুসারে, অ্যাপল তাদের অধিকাংশ পণ্য চীনেই তৈরি করে, আগে থেকেই ট্রাম্পের শুল্কনীতির কারণে চাপে ছিল। চীনের ওপর ১২৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের ফলে মার্কিন বাজারে এইসব পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল। তবে নতুন এই ছাড়ের ফলে আইফোনসহ অন্যান্য ইলেকট্রনিক পণ্য এখনই শুল্কের বোঝায় পড়ছে না।
ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদেও অ্যাপল কিছু পণ্যে শুল্ক ছাড় পেয়েছিল। এবারও তারা একই সুবিধা পাচ্ছে, যা কোম্পানিটির জন্য একটি বড় সুরক্ষা হিসেবে কাজ করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
মার্কিন কাস্টমস ও বর্ডার প্রটেকশন কর্তৃপক্ষ এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, স্মার্টফোন, ল্যাপটপ, হার্ডড্রাইভ, মেমোরি চিপসহ বেশ কিছু ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ এই শুল্ক ছাড়ের আওতায় পড়েছে। এইসব পণ্যের বড় অংশই চীনে তৈরি অথবা চীনা যন্ত্রাংশ ব্যবহার করে অন্যত্র সংযোজন করা হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদিও ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যেই শুল্ক চাপিয়েছে, বাস্তবে চীন থেকে ইলেকট্রনিক পণ্য উৎপাদন সরিয়ে নেয়া এত সহজ নয়। কারণ চীনে খরচ কম, দক্ষ কর্মী সহজে মেলে এবং পণ্য সংযোজনের জন্য একাধিক সহায়ক শিল্প আছে।
তবে মার্কিন সরকারের বারবার সিদ্ধান্ত বদল এবং নানা দেশের পাল্টা প্রতিক্রিয়া বিশ্ববাণিজ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি করছে। ভারতের মতো দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ভালো রাখার চেষ্টা করছে। অন্যদিকে চীন পাল্টা শুল্ক আরোপ করায় যুক্তরাষ্ট্রও তাদের ওপর কড়াকড়ি বাড়িয়েছে।
বর্তমানে ৯০ দিনের জন্য ৭৫টি দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক স্থগিত রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র, যার মধ্যে ভারতও রয়েছে। আপাতত কিছু ইলেকট্রনিক পণ্য শুল্ক যুদ্ধের বাইরে থাকলেও, এই অবস্থা কতদিন স্থায়ী হবে তা নিশ্চিত নয়।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল