টানা বৃষ্টি ও পদ্মা নদীর প্রচণ্ড স্রোতের কারণে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার পদ্মা সেতু প্রকল্প রক্ষা বাঁধে নতুন করে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। সোমবার (৭ জুলাই) বিকেলেই মাত্র দুই ঘণ্টার মধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে অন্তত পাঁচটি বসতবাড়ি ও পাঁচটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। নদীর তীব্র ভাঙনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এলাকাবাসীর মাঝে, সরিয়ে নেওয়া হয়েছে আরও ১০টি দোকান।
স্থানীয় ও পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, ২০১০-১১ অর্থবছরে পদ্মা সেতু থেকে মাঝির ঘাট হয়ে পূর্ব নাওডোবা আলমখার কান্দি জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত দুই কিলোমিটার পদ্মা সেতু প্রকল্পের কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড বাঁধ নির্মাণ করে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ। এতে ব্যয় হয় ১১০ কোটি টাকা। গত বছরের ৩ নভেম্বর থেকে বাঁধের নাওডোবা ইউনিয়নের মাঝির ঘাট এলাকার ধস শুরু হয়। ১৬ নভেম্বর বিকেল পর্যন্ত বাঁধটির প্রায় ১০০ মিটার ধসে পড়ে নদীতে। এতে কংক্রিটের সিসি ব্লকগুলো তলিয়ে যায় পানিতে। এছাড়া আশপাশে দেখা দেয় ফাটল।
পরে বাঁধটির সংস্কারে দায়িত্ব দেওয়া হয় পানি উন্নয়ন বোর্ডকে। গত বছর ওই বাঁধের যে ১০০ মিটার অংশ বিলীন হয়েছিল তা দুই কোটি ৮৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ওই স্থানে বালুভর্তি জিওব্যাগ ও সিসি ব্লক ফেলার কাজ শুরু করা হয়। এদিকে ঈদের দিন ভোররাতে সংস্কার করা বাঁধের ১০০ মিটার অংশসহ পাশের আরও একটি স্থানে ভাঙন শুরু হয়। একদিনের মধ্যে বাঁধের আড়াইশ মিটার অংশ নদীতে তলিয়ে যায়। এরপর ক্ষতিগ্রস্ত স্থানে নতুন করে জিওব্যাগ ডাম্পি করে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
শাহিন মাঝি নামের এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, 'বিকেল ৪টার দিকে হঠাৎ ভাঙনের খবর পাই। কিছু বুঝে উঠার আগেই চোখের সামনে কয়েকটি বাড়ি নদীতে তলিয়ে যায়। মানুষ দৌড়ে দৌড়ে মালামাল সরিয়ে নিচ্ছে।'
বাজারের ব্যবসায়ী সাইদুল ইসলাম জানান, 'আকস্মিক ভাঙনে আমরা শ্রমিক পাচ্ছি না। পরিবার-পরিজন দিয়েই দোকানের মালামাল সরাতে হচ্ছে। অনেক ক্ষতির মুখে পড়েছি। আমরা দ্রুত ভাঙন রোধের দাবি জানাই।'
বিডি প্রতিদিন/মুসা