কুমিল্লার ঐতিহ্যবাহী খাদি কাপড় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। গত ৩০ মে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এই স্বীকৃতির সনদ প্রদান করা হয়। এতে খুশি কুমিল্লার খাদির ব্যবসায়ী ও গ্রাহকরা।
খাদিঘরের স্বত্বাধিকারী প্রদীপ কুমার রাহা বলেন, “যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে খাদি শিল্পে নান্দনিকতার সংযোজন হয়েছে। এখন দেশ-বিদেশে যাচ্ছে আমাদের খাদি পোশাক। শত বছরের পুরোনো খাদির আরও আগেই জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়া উচিত ছিল। তবে দেরিতে হলেও স্বীকৃতি পেয়ে আমরা খুশি।”
সাংস্কৃতিক সংগঠক জামিল আহমেদ খন্দকার বলেন, “খাদির স্বীকৃতির খবরে আমরা আনন্দিত। যারা এই অর্জনের পেছনে কাজ করেছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। আশা করি, এখন থেকে দেশ-বিদেশে কুমিল্লার খাদির চাহিদা আরও বাড়বে।”
কুমিল্লার ইতিহাস গবেষক অ্যাডভোকেট গোলাম ফারুক বলেন, “১৯২১ সালে মহাত্মা গান্ধীর আহ্বানে ভারতে অসহযোগ আন্দোলনের সময় কুমিল্লায় খাদি শিল্পের সূচনা ঘটে। দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে সে সময় মানুষ চরকায় তৈরি খাদি পোশাক ব্যবহার শুরু করেন। খাদরের (গর্তে) চরকায় বসে এ কাপড় তৈরি করা হতো বলে একে ‘খাদি’ বলা হয়।
১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর ভারতের পৃষ্ঠপোষকতা প্রত্যাহার করা হলে কুমিল্লার খাদি শিল্প সংকটে পড়ে। পরে এই শিল্পকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসেন বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বার্ড)-এর প্রতিষ্ঠাতা আখতার হামিদ খান। জিআই স্বীকৃতি এই ঐতিহ্যবাহী শিল্পকে নতুনভাবে তুলে ধরবে।”
কুমিল্লার জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. আমিরুল কায়ছার বলেন, “জেলা প্রশাসনের দীর্ঘ প্রচেষ্টায় গত বছর কুমিল্লার রসমালাই জিআই তালিকাভুক্ত হয়। তখন থেকেই কুমিল্লার খাদি ও বিজয়পুরের মৃৎশিল্পের জন্য জিআই স্বীকৃতির কাজ চলছিল। তিনটি পণ্যের মধ্যে রসমালাই ও খাদি এখন জিআই পণ্য। আশা করি, মৃৎশিল্পও খুব দ্রুত স্বীকৃতি পাবে।”
বিডি প্রতিদিন/আশিক