ক্রিকেটের ইতিহাস আর ঐতিহ্যের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বিলেতের লন্ডনে থাকা লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ড। সাত সাগর, তেরো নদী পেরিয়ে ক্রিকেটের এই আবাসভূমির ছোঁয়া কিছুটা লেগেছে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। নির্মাণ আর স্থাপত্যে লর্ডসকে খানিকটা অনুকরণের চেষ্টা করা হয়েছে। ফলশ্রুতিতে প্রকৃতির সতেজতার মধ্যে স্থাপিত সিলেট ক্রিকেট স্টেডিয়াম পেয়েছে ভিন্নমাত্রা। দেশসেরা তো বটেই, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যেও অন্যতম সুন্দর ক্রিকেট গ্রাউন্ডের স্বীকৃতি পেয়েছে এটি। ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে দক্ষিণ এশিয়ার ‘লর্ডস’ হিসেবে পরিচিত পাওয়া সিলেটের এই স্টেডিয়াম ঘিরে সবার মুগ্ধতার সাতকাহনই শোনা গেছে বিভিন্ন সময়ে।
সিলেট শহরতলির লাক্কাতুরাস্থ সবুজ চা বাগানের মধ্যে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের অবস্থান। ড্রোন ক্যামেরায় যখন আকাশ থেকে এ স্টেডিয়ামকে দেখানো হয়, তখন সেটিকে সবুজের গালিচায় কোনো পাখির শৈল্পিক বাসার মতোই মনে হয়। ৬১৫ ফুট দৈর্ঘ্য আর ৪৮৫ ফুট প্রস্থের এই স্টেডিয়ামের দক্ষিণ পাশেই আরেকটি মাঠ রয়েছে, যেটি প্রথমে আউটার স্টেডিয়াম হিসেবে যাত্রা শুরু করে। পরবর্তীতে সুযোগসুবিধার সব বন্দোবস্ত থাকায় এটিও আন্তর্জাতিক মর্যাদা পায়, যেটি এখন সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম গ্রাউন্ড-২ নামে পরিচিত।
২০১৪ সালে স্টেডিয়ামটির পথচলা শুরু হয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। সে সময় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের কোয়ালিফাইং রাউন্ডের কয়েকটি ম্যাচ হয় এখানে। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ জাতীয় দল এ মাঠে খেলতে নামে। টি-টোয়েন্টি ম্যাচে প্রতিপক্ষ ছিল শ্রীলঙ্কা। ওই বছরের নভেম্বরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে স্বাগতিকদের ম্যাচ দিয়ে টেস্ট আঙিনায় পা পড়ে এ ভেন্যুর। পরের মাসেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টাইগারদের ম্যাচ দিয়ে ওয়ানডেতেও সূচনা হয় সিলেট স্টেডিয়ামের। এরপর থেকে প্রায় নিয়মিতই আন্তর্জাতিক ম্যাচ হচ্ছে প্রকৃতির ঐশ্বর্যে ভরপুর স্টেডিয়ামটির উভয় গ্রাউন্ডেই। জাতীয় লিগের ম্যাচও নিয়মিত গড়ায় এখানে। নারী দল এবং বয়সভিত্তিক দলের খেলাও হয় দেশসেরা স্টেডিয়ামটিতে।
প্রকৃতির কোলে গড়ে ওঠা সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামকে ঘিরে পূর্ণাঙ্গ ক্রিকেট কমপ্লেক্স গড়ার বিষয়টিও প্রক্রিয়াধীন। যেখানে থাকবে ক্রিকেট একাডেমি, ডরমেটরি, স্কুল, অনুশীলন মাঠ প্রভৃতি।