কয়েক মাসের বিরতির পর আবার সিরিয়ার বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানী দামাস্কাসের প্রেসিডেন্টের প্রাসাদের অদূরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, সংখ্যালঘু দ্রুজ জনগোষ্ঠীকে কট্টরপন্থীদের হামলা থেকে রক্ষার উদ্দেশ্যেই এই সামরিক অভিযান চালানো হয়েছে।
সিরিয়ায় বসবাসকারী একটি সংখ্যালঘু ধর্মীয় গোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত দ্রুজ। ধর্মবিশ্বাসের দিক থেকে তারা ইসলাম ধর্মের একটি শাখা হিসেবে নিজেদের দাবি করে। কিন্তু অতীতে আল কায়দা, আইএস-সহ বিভিন্ন কট্টরপন্থী ইসলামি সংগঠনের নিশানা হয়েছে দ্রুজ জনগোষ্ঠী। সিরিয়া ছাড়াও লেবানন ও ইসরায়েলে এই ধর্মীয় গোষ্ঠীর মানুষের বসবাস। তবে দ্রুজদের রক্ষার অজুহাত দেওয়া হলেও সামরিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের ধারণা, প্রতিবেশী দেশে গৃহযুদ্ধ এবং ক্ষমতার পালাবদলের জেরে অনিশ্চয়তায় সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে সক্রিয় হয়েছেন নেতানিয়াহু।
গত ডিসেম্বরে সিরিয়ায় বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামস (এইচটিএস)-এর যোদ্ধাবাহিনীর রাজধানী দামেস্ক দখল এবং প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ সরকারের পতন ঘটেছিল। আসাদ সপরিবারে পালিয়ে আশ্রয় নেন মিত্র দেশ রাশিয়ায়। তারপরেই সিরিয়ায় বিমান এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো শুরু করে ইসরায়েল। হামলায় সিরিয়ার গুরুত্বপূর্ণ সেনা শিবির, প্রতিরক্ষা গবেষণাগার এবং সামরিক কেন্দ্র ধ্বংস হয়। এর মধ্যে বিমানবন্দর, অস্ত্র ও গোলাবারুদের ভান্ডার, রাডার স্টেশন, সামরিক সিগন্যাল স্টেশন এবং ক্ষেপণাস্ত্র ও গণবিধ্বংসী অস্ত্রের গবেষণাগার ছিল।
এইচটিএস বাহিনী যাতে অত্যাধুনিক সামরিক প্রযুক্তি হাতে না পায়, তা নিশ্চিত করতেই তেল আবিবের এই ‘তৎপরতা’ বলে মনে করা হয়েছিল। সেই সঙ্গে সিরিয়ার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট হেরমন এবং গোলান মালভূমির কিছু অংশও সে সময় নেতানিয়াহুর বাহিনী দখল করে নেয়।
১৯৭৪ সালের যুদ্ধবিরতি চুক্তির পর সিরিয়া ও ইসরায়েল সীমান্তে বাফার জোন তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু ডিসেম্বরে সিরিয়ায় ক্ষমতার পালাবদলের পরে একতরফাভাবে সেই বাফার জোন দখল করে নেয় ইসরায়েলি সেনা। এবার কি তাদের লক্ষ্য রাজধানী দামেস্ক? তথ্যসূত্র: বিবিসি, আল-জাজিরা, দ্য গার্ডিয়ান, রয়টার্স
বিডি প্রতিদিন/একেএ