অপরিকল্পিত রাস্তা নির্মাণ ও পুকুর খননে খাল-নদী-ক্যানেল ও সেতু-কালভার্টের মুখ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পানি নিষ্কাশনের পথ রুদ্ধ হয়ে গেছে। এ কারণে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার প্রায় ৩ হাজার বিঘা জমি জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। এসব জমি অনাবাদি থাকায় হাজার হাজার কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। দ্রুত পানি নিষ্কাশনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা সম্প্রতি মানববন্ধনও করেছেন। স্থানীয়না জানান, সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নে জালশুকা, উনুখা, পাঠানপাড়া, চৈত্রহাটি, পুকুরপাড়, কুমারগাইলজানি, পাঁচান, চকসাদি, খৈইশ্বর, আগরপুরসহ ১২ গ্রামের প্রায় ৩ হাজার বিঘা জমি দীর্ঘদিন ধরে জলাবদ্ধ হয়ে রয়েছে। অপরিকল্পিত ক্যানেল বন্ধ করে রাস্তা নির্মাণ, সেতু-কালভার্টের মুখ বন্ধ হওয়ায় পানি নিষ্কাশন ব্যাহত হয়ে এ অবস্থা তৈরি হয়েছে। এ কারণে এসব জমিতে কোনো ধরনের ফসল আবাদ হচ্ছে না। এর মধ্যে দবিরগঞ্জ বাজারের পূর্ব পাশে মহাসড়কের তিন নাম্বার ব্রিজ, উনুখাঁ তিন রাস্তার দক্ষিণ সাইডের ব্রিজ,উনুখাঁ গ্রামের পূর্ব সাইডের ব্রিজ, জালশুকা গ্রামের দক্ষিণ সাইডের ব্রিজের মুখ বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া দবিরগঞ্জ গ্রামের উত্তর সাইডে ও পূর্ব সাইডে রাস্তার পাশে পানি বের হওয়ার পথে (নালে) মাটি ভরাট করার কারণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। প্রায় ৪শ থেকে ৫শ পুকুর খননের কারণে ৩/৪ হাজার বিঘা জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
কৃষক শাহজামাল লাবু, আকবর আলী, রজব আলী ও জর্জিস প্রামাণিক জানান, জলাবদ্ধতার কারণে কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। ফসল আবাদ না হওয়ায় পরিবার-পরিজন নিয়ে হাজার হাজার কৃষক কষ্টে দিন যাপন করছেন।
কৃষক হামিদুল ইসলাম, আরমান হোসেন ও আবদুল গফুর অভিযোগ করেন, ক্যানেলের মুখ খুলে দেওয়া এবং পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থার জন্য পাঁচ বছর ধরে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েও কোনো সুফল পাননি তারা। প্রশাসন পুকুর খনন বন্ধসহ পানি নিষ্কাশনে কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না। এসব জমি আবাদযোগ্য করার জন্য পানি নিষ্কাশনে খাল খননের দাবি জানিয়েছেন ওই কৃষকরা।
উল্লাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুবর্ণা ইয়াসমিন সুমি জানান, জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য কৃষি অধিদপ্তরে কোনো ফান্ড নেই। সরেজমিন পরিদর্শন করে সমস্যাটি তুলে ধরে উপজেলা প্রশাসনের কাছে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। আশা করছি, প্রশাসন জলাবদ্ধতা নিরসনে ব্যবস্থা নিয়ে কৃষকের জমিগুলো চাষাবাদ যোগ্য করে তুলবেন।