ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা সিটিতে সর্বাত্মক অভিযানের অংশ হিসেবে বিমান ও ড্রোন থেকে নির্বিচার বোমাবর্ষণ করছে দখলদার ইসরায়েল। এ ছাড়া বিস্ফোরক বোঝাই রোবট দিয়ে সেখানকার বাড়িঘর ধসিয়ে দিচ্ছে তারা। এতে গাজা সিটিতে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ক্ষুধা-অনাহারে অপুষ্টিতে ভুগে এখন পর্যন্ত ৪৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল নতুন করে অনাহারে আরও চারজনের মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এতে অনাহারে সেখানে প্রাণহানি দাঁড়িয়েছে ৪৩৫ জনে। মধ্য গাজা থেকে আলজাজিরার সাংবাদিক হানি মাহমুদ গতকাল জানান, গাজার পরিস্থিতি এখন মানুষের সহ্য ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। তিনি মধ্যগাজার একটি সড়ক থেকে বলেন, এখান দিয়ে অনেক মানুষ পালিয়ে যাচ্ছেন। একটি ঠেলাগাড়িতে এক রোগীকে নিয়ে যেতে দেখেছেন তিনি। তাকে হাসপাতাল থেকে তার আত্মীয়স্বজনরা নিয়ে এসেছেন। জীবন বাঁচাতে তারা এখন উত্তর দিকে যাচ্ছেন। হানি মাহমুদ বলেন, ‘ইসরায়েলিরা আরও হামলা চালিয়ে অসহনীয় পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে।’
গাজা সিটির এক বাসিন্দা তাকে বলেছেন, গাজা সিটিকে ভয়াবহতা হচ্ছে। সেখানে অব্যাহত হামলা চলছে। আকাশ থেকে বিমান ও ড্রোন দিয়ে বোমাবর্ষণ হচ্ছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী রিমোট কন্ট্রোল রোবট দিয়ে গাজা সিটিতে বিস্ফোরক পাঠাচ্ছে। এরপর সেগুলোতে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে একের পর এক ভবন ধ্বংস করে দিচ্ছে। জনবহুল ওই এলাকায় হামলার কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভয় ও শঙ্কা তৈরি করছে। এতে করে সাধারণ মানুষ জীবন বাঁচাতে পালিয়ে যাচ্ছেন। এখন গাজা সিটি থেকে দলে দলে মানুষ উত্তর দিকে চলে যাচ্ছে।
দুই বছর ধরে চলা ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজার মানুষ অসংখ্যবার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। দখলদাররা নিরাপদ আশ্রয়ের কথা বলে গাজাবাসীকে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় নিয়ে গেছে। কিন্তু সেখানেও তারা হামলা চালিয়েছে। এখন পর্যন্ত ফিলিস্তিনি এ উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় ৬৫ হাজারের বেশি মানুষ নিহত ও দেড় লাখ মানুষ আহত হয়েছেন। তবে হাজার হাজার মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে থাকায় মৃতের প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি বলে সংশ্লিষ্টদের ধারণা।
অপরদিকে, প্রায় দুই বছর ধরে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় বর্বরতা চালাচ্ছে দখলদার ইসরায়েল। ফিলিস্তিনি এ ভূখণ্ডে অব্যাহত হামলার পাশাপাশি সেখানে অবরোধ আরোপ করে রেখেছে তারা। এতে করে সাধারণ মানুষের যে পরিমাণ খাবার প্রয়োজন সেগুলো গাজায় প্রবেশ করছে না। এতে খেয়ে না খেয়ে থাকতে হচ্ছে সেখানকার মানুষকে। সূত্র : আলজাজিরা, মিডেল ইস্ট আই।