শেরপুর পৌরসভার শেখহাটি বাজার-গাজিরখামার-নালিতাবাড়ী ১৬ কিলোমিটার সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে বেহাল। সড়কজুড়ে খানাখন্দ আর ছোটবড় গর্ত। কঠিন হয়ে পড়েছে যানবাহন চলাচল। কোনো কোনো স্থানে হাঁটাও দুষ্কর। চার বছর ধরে সড়কটির বেহালের কারণে যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে লাখও মানুষ। স্থানীয় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, কৃষক ও অসুস্থ ব্যক্তিদের নিয়ে যাতায়াতে বেশি সমস্যা হচ্ছে। প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। রাস্তাটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছে স্থানীয়রা। শেরপুর স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘শেখহাটি বাজার-গাজিরখামার-নালিতাবাড়ী সড়ক সংস্কারে একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় সদর উপজেলার কামারের চর থেকে গাজীরখামার, নালিতাবাড়ী হয়ে হালুয়াঘাট পর্যন্ত সড়ক মেরামত করা হবে। প্রকল্পটি অনুমোদন হয়ে এলেই কাজ শুরুর উদ্যোগ নেওয়া হবে। যেসব জায়গায় বড় খানাখন্দ রয়েছে জরুরি ভিত্তিতে সেগুলো মেরামত করে দেওয়া হবে।’
জানা যায়, প্রতিদিন জনগুরুত্বপূর্ণ এ রাস্তা দিয়ে শেরপুর এবং নালিতাবাড়ী পৌরসভা ও পাঁচটি ইউনিয়নের মানুষ যাতায়াত করে। শেরপুর-বাজিতখিলা-তিনানি দিয়ে সওজ বিভাগের অন্য একটি রাস্তা থাকলেও দূরত্ব বিবেচনায় শেখহাটি বাজার-গাজিরখামার-নালিতাবাড়ী সড়কটিই বেশির ভাগ মানুষ ব্যবহার করে। স্থানীয় সরকার বিভাগ মাঝেমধ্যে জোড়াতালি দেয় কিন্তু কয়েক দিন যেতেই আবার আগের অবস্থা তৈরি হয়। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে সড়কটি প্রায় ১১ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রশস্তকরণ ও সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছিল সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
নানান জটিলতা দেখিয়ে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কয়েকবার মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২০ সালে কোনোভাবে শেষ করে কাজ। এরপর ছয় মাসের মধ্যে রাস্তায় দেখা দেয় ভাঙন। ভাঙতে ভাঙতে এখন চলাচলের প্রায় অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। নালিতাবাড়ী উপজেলার কিছু অংশ মোটামুটি থাকলেও শেরপুর সদর অংশের অবস্থা খুবই খারাপ। চলতি বর্ষা মৌসুমে সড়কটি আরও নাজুক হয়ে পড়েছে। কোথাও খানাখন্দ, আবার কোথাও দেড় থেকে দুই ফুট গভীর গর্ত হওয়ায় যান চলাচলে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে। ভাঙা রাস্তায় চলাচলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে যানবাহন। সরেজমিনে সদর উপজেলার গাজিরখামার বাজার অংশে দেখা যায়, সেখানে পাকা সড়কের কোনো চিহ্নই নেই। পুরো রাস্তা কাদাপানিতে একাকার। বাজারের লোকজন পুরোনো ইট-সুরকি ফেলে চলার উপযোগী করার চেষ্টা করছে। তা-ও বেশি দিন টেকে না। অন্য অংশেও কিছুদূর পরপরই বড় বড় গর্ত। শেখহাটি মোড়ের অবস্থা বেশি খারাপ। সড়কের পাশে পাঁচটি বাজার এলাকা হয়ে উঠেছে ভয়ংকর। স্থানীয়দের অভিযোগ, টেন্ডার হওয়ার পর রাস্তাটি ঠিক করতে লেগে গেছে চার বছর। আর এক বছর যেতে না যেতেই আবার ভেঙে গেছে।