নিজ চোখে সন্তানকে আগুনে পুড়তে দেখেছি। পরে মেয়েকে ভবনের রড ভেঙে বের করেছি। শুধু আমার বাচ্চা না, অনেক অনেক বাচ্চা- শুধু বাঁচাও বাঁচাও বলতেছিল। কথাগুলো বলছিলেন উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী সামিয়ার বাবা আবদুর রহিম। তিনি উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরের বাসিন্দা। বর্তমানে তার মেয়ে সামিয়া জাতীয় বার্ন ইউনিটের আইসিউতে রয়েছে।
গতকাল রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের প্রত্যক্ষদর্শী আবদুর রহিম। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটির দোতলায় আটকে পড়েছিল তার মেয়ে সামিয়া। যাকে তিনি উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। তার আরেক ছেলে সিয়াম একই স্কুলে দশম শ্রেণির ছাত্র।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আবদুর রহিম বলেন, দুপুর ১টার দিকে আমি স্কুলে গিয়েছি, বাচ্চাকে আনতে। এরপর আমার বড় ছেলে ফোন দিয়ে বলল- ওর (সামিয়া) ছুটি বেলা ২টায়। এ কথা শুনে আমি গেট থেকে সরে আসি। এ সময়ই একটি বিমান এসে ভবনের ওপর পড়ে। তখন শুধু একটা বিকট শব্দ শুনেছি। এরপরই দেখি, চারদিকে আগুন। তখন আমি মেয়ের চিন্তায় পাগল হয়ে গেছি। কীভাবে তাকে বের করব? ও ক্লাস ফোরে পড়ে। ওদের ক্লাসরুম ছিল দোতলায়।
তিনি আরও বলেন, ভবনের দোতলা থেকে মেয়েকে একা বের করতে পারছিলাম না। এরপর আর্মিসহ কয়েকজন এসে রড ভেঙে বের করে এনেছি। আমি ভেবেছিলাম আমার মেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। যখন আমি তাকে নিয়ে নিচে এলাম, তখন দেখি সে পড়ে গেছে। আমি আবার পাগল হয়ে যাই। পরে আত্মীয়স্বজনদের ফোন দিয়ে আনি। সেখান থেকে তাকে মেডিকেলে নিয়ে যাই। সেখানে আরও করুণ অবস্থা। এত রোগী, ডাক্তাররা পেরে উঠছেন না। আবদুর রহিম বলেন, আমার মেয়ের হাত-পা-কান ও গলা পুড়ে গেছে। বর্তমানে জাতীয় বার্ন ইউনিটের আইসিইউতে আছে। তার পরিস্থিতি এখন আল্লাহর হাতে। ডাক্তার আমাকে আশ্বাস দিয়েছে। আমার মেয়ের অনেক কষ্ট হচ্ছে। দোয়া করবেন।