গোপালগঞ্জের চিথলিয়া গ্রামে শৈলদহ নদীর পাড়ে ৭৬ মিটার এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে ভাঙনে সড়কের একটি অংশ ও ব্রিজ নদীতে বিলীন হয়েছে। হুমকিতে পড়েছে ওই গ্রামের আরও ৬০টি বসতবাড়ি, শত শত বিঘা ফসলি জমি, গাছপালা, স্কুল, মন্দির, কমিউনিটি ক্লিনিক, পানির ট্যাংকসহ অসংখ্য স্থাপনা। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ডুমুরিয়া ইউনিয়নের চিথলিয়া গ্রামের নদীর পাড়ের বাসিন্দারা।
চিথলিয়া গ্রামের মো. বোরহান আলী বিশ্বাস বলেন, আমাদের গ্রামের পাশ দিয়ে শৈলদহ নদী প্রবাহিত। এখানে ৭৬ মিটার এলাকাকে নদী ভাঙনপ্রবণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। যা আমাদের গ্রামের মধ্যে পড়েছে। ভাঙন এলাকায় রয়েছে বিশাল বাঁক। তীব্র স্রোত এসে বাঁকের পাড়ে আছড়ে পড়ছে। তাতেই ভাঙছে নদীর পাড়। এ নদীর পাশ দিয়ে সড়াবাড়ি থেকে একটি পাকা সড়ক চিথলিয়া হয়ে চলে গেছে ডুমুরিয়া বাজার পর্যন্ত। ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন পাটগাতী ও ডুমরিয়া ইউনিয়নের ১০ গ্রামের অন্তত ১৫ হাজার মানুষ যাতায়াত করে। গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর এ সড়কের চিথলিয়া খাল ও শৈলদহ নদীর সংযোগস্থলের ব্রিজটি নদী ভাঙনের কবলে পড়ে। চলতি বছর ৩০ এপ্রিল আমাদের গ্রামে এ সড়কের একটি অংশ ভেঙে নদীতে বিলীন হয়। দেবে গেছে আরও বেশ কিছু অংশ। ৫ জুন আমাদের গ্রামে পানির ট্যাংকসংলগ্ন এলাকায় নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। সড়ক নদীতে বিলীন হচ্ছে। যাতায়াত ও পণ্য পরিবহনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে আমরা দুর্ভোগে পড়েছি। একই গ্রামের সুবল বিশ্বাস বলেন, ৫ জুন থেকে আবার নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। আমরা গরিব মানুষ। সহায়সম্পদ নদীগর্ভে চলে গেলে নিঃস্ব হয়ে পড়তে হবে। ভাঙন হুমকির মুখে পড়েছে আমাদের এলাকার ৬০টি বসতবাড়ি, শত শত বিঘা ফসলি জমি, গাছপালা, স্কুল, মন্দির, কমিউনিটি ক্লিনিক, পানির ট্যাংক।
ওই গ্রামের রেবা রানী মণ্ডল (৫৯) বলেন, নদীপাড়ে বাড়ি। নদীর স্রোত আমার বাড়িতেই আঘাত হানছে। বাড়ি কখন নদীতে বিলীন হয়, সে আতঙ্কে রাতে ঘুম আসে না। নদীতে বাড়িঘর চলে গেলে আমরা নিঃস্ব হয়ে পড়ব। বসবাসের জায়গা থাকবে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডকে স্থায়ীভাবে নদী ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নিতে আহ্বান জানাচ্ছি। এটা করা হলে গ্রামীণ জনপদের বিপুল পরিমাণ সম্পদ রক্ষা পাবে। গোপালগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম রেফাত জামিল বলেন, চিথলিয়ায় ৭৬ মিটার এলাকা শৈলদহ নদীর ভাঙনপ্রবণ। আমরা পরিদর্শন করেছি। সেখানে নদী ভাঙন প্রতিরোধের কাজ করার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান কার্যালয়ে চাহিদা পাঠানো হয়েছিল। এর মধ্যে ৪৮ মিটার পাস হয়েছে। আমরা দ্রুত কাজ শুরু করে ভাঙন প্রতিরোধের ব্যবস্থা করব।