উত্তম কুমারের পুত্র গৌতম চট্টোপাধ্যায়ও চেয়েছিলেন বাবার মতো অভিনয়কেই ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিতে। তাই পড়াশোনা শেষ করে মনের সেই ইচ্ছা বাবাকে জানিয়েছিলেন গৌতম। কিন্তু ছেলের মুখ থেকে অভিনয়ের কথা শুনেই রীতিমতো বিরক্ত হয়েছিলেন মহানায়ক। আর শুধু বিরক্তিই নয়, ছেলেকে স্পষ্ট বলে দিয়েছিলেন যে, আর যাই হোক অভিনয় করা যাবে না! সিনেমায় তোমার কোনো ক্যারিয়ার নেই!
‘অন্ধ অতীত’ নামে একটি সিনেমার অফার পেয়েছিলেন উত্তমপুত্র গৌতম। সিনেমাটির পরিচালক হীরেন নাগ। এই সিনেমায় অভিনয় করেছেন খোদ উত্তমও। বাবার সঙ্গে সহ-অভিনেতা হিসেবে কাজ করার কথা ছিল গৌতমের। পরিচালক এবং গৌতম এমনটিই চেয়েছিলেন। কিন্তু উত্তম একেবারেই চাননি তার ছেলে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে পা রাখুক।
ছেলেকে এমন কেন বলেছিলেন মহানায়ক?
উত্তম কুমার ভারতীয় চলচ্চিত্রের মহানায়ক হলেও তার ক্যারিয়ারের শুরুটা খুব একটা সহজ ছিল না। একটা সুযোগ পাওয়ার জন্য কখনো এনটিওয়ান, কখনো ইন্দ্রপুরী স্টুডিওতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় কাটিয়েছেন। তারপর সুযোগ মিললেও একের পর এক সিনেমা ফ্লপ। সেই সময় অবশ্য কলকাতা পোর্টে চাকরি করতেন উত্তম। পরপর সিনেমা ফ্লপ হওয়ার কারণে উত্তম তো ঠিক করেই ফেলেছিলেন যে, অভিনয় জগৎ ছেড়ে দেবেন। তবে বলে না, কপালে যা লেখা থাকে, তাই ঘটে!
উত্তম যে ইতিহাস রচনা করবেন, তা যেন আগে থেকেই নিশ্চিত ছিল। আর সেই কারণেই ভাগ্যের চাকা ঘোরে, আর উত্তম ধীরে ধীরে হয়ে ওঠেন টলিউডের মধ্যমণি। কিন্তু উত্তম চাননি, তার ছেলে গৌতম এমন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাক। আর সেই কারণেই ছেলেকে অভিনয়ে আসতে বারণ করেছিলেন। এমনকি উত্তম আগে থেকে বুঝেছিলেন যে, গৌতম সিনেমায় পা রাখলেই তার সঙ্গে তুলনা হবে। এর ফলে মানসিক চাপে পড়বেন গৌতম। ছেলের কঠিন ভবিষ্যতের কথা ভেবেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মহানায়ক।
তরুণ কুমারের লেখা থেকে জানা যায়, উত্তম তার ছেলে গৌতমের জন্য নিজেই ওষুধের ব্যবসার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন।
বিডি প্রতিদিন/কেএ