ইসরায়েলের সঙ্গে ইরানের পরবর্তী সংঘাত ‘চূড়ান্ত সংঘর্ষ’ হবে বলে জানিয়েছে তেহরান।
রাশিয়ার সংবাদমাধ্যম আরটিকে এই তথ্য জানিয়েছে ইরানের একটি সূত্র।
সূত্রটি জানিয়েছে, ইরান এখন ইসরায়েলের দুর্বলতা সম্পর্কে সচেতন এবং দেশটির কাছে এখনও বহু উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে, যা ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ভেদ করতে সক্ষম।
গত ১২ জুন দিবাগত মধ্যরাতে ইরানের ওপর হামলা চালায় ইসরায়েল। ইহুদিবাদী দেশটির দাবি, তেহরান পারমাণবিক বোমা তৈরির শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ইসরায়েলের বিমান হামলায় ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনাগুলোর পাশাপাশি শত শত মানুষ এবং বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও বিজ্ঞানী নিহত হন, যারা পারমাণবিক কর্মসূচির সঙ্গে জড়িত বলে ধারণা করা হয়।
২২ জুন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়, যার মধ্যে ছিল নাতাঞ্জ ও ফরদোর ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র।
তেহরান বরাবরই সামরিক উদ্দেশ্যে পারমাণবিক কর্মসূচি পরিচালনার অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে। দেশটি পাল্টা জবাব দেয় কামিকাজে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মাধ্যমে। ইরান সরাসরি ইসরায়েল এবং কাতারে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের আল উদেইদ বিমানঘাঁটিতে আঘাত হানে।
১২ দিনব্যাপী এ সংঘাত শেষ হয় যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হওয়া এক যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে, যা এখন পর্যন্ত কার্যকর রয়েছে।
সোমবার আরটি-কে দেওয়া এক মন্তব্যে তেহরানের এক সূত্র জানিয়েছে, ইসরায়েলের সঙ্গে পরবর্তী সংঘাতকে ‘চূড়ান্ত যুদ্ধ’ হিসেবে দেখছে ইরান। তিনি আরও জানান, সাম্প্রতিক উত্তেজনার সময় ইরান ইসরায়েলি শাসনের দুর্বলতা শনাক্ত করতে পেরেছে।
সূত্রটি দাবি করে, ইরানের কাছে এখনও নতুন প্রজন্মের হাজার হাজার ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে, এবং যুদ্ধ শুরু হলে প্রতিদিন অন্তত কয়েক শত ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের দিকে ছোড়া হবে।
সূত্রটি জানায়, দেশের জনগণ এবং প্রবাসী ইরানিদের কাছ থেকে সরকার অভূতপূর্ব সামাজিক সমর্থন পাচ্ছে।
যদিও ইরান জানে যে যেকোনও সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের পাশে দাঁড়াবে, তবুও তেহরান এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে প্রস্তুত বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রকে লক্ষ্য করে পাল্টা হামলা চালানোর বিষয়ে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেন, তেহরানের সামরিক জবাবে ইসরায়েলি রাষ্ট্র কার্যত ধ্বংসপ্রাপ্ত ও নিস্ক্রিয় হয়ে পড়ে। তার মতে, যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ না হলে ইহুদিবাদী শাসন পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যেত।
এদিকে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, তেহরান যদি পারমাণবিক কর্মসূচি চালিয়ে যায় বলে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বাস করে, তাহলে আরও হামলা চালানো হবে।
অন্যদিকে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুও ইরানের বিরুদ্ধে আরও হামলার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেননি। সূত্র: আরটি
বিডি প্রতিদিন/একেএ