অবশেষে বোরো ধান ও চাল সংগ্রহে সফল হয়েছে চট্টগ্রাম খাদ্য বিভাগ। টানা পাঁচ মৌসুম এ বিভাগ ধান-চাল সংগ্রহে পুরো ছিল ব্যর্থ। এমনকি এবার ধান সংগ্রহের পরিমাণ গত এক দশকের মধ্যে রেকর্ড। মূলত চলতি মৌসুমে ধানের বাড়তি উৎপাদন ও বাড়তি দাম দেওয়ার কারণে কৃষক ও মিল মালিকরা ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সফল হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। চট্টগ্রাম আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক এস এম কায়সার আলী বলেন, বিগত বছরগুলোতে ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্য পূরণ না হওয়ায় সরকার এবার ধান ও চালের দাম কেজিপ্রতি চার টাকা বাড়িয়েছে। চলতি মৌসুমে সরকারি পর্যায়ে ধান কেনা হয় কেজিপ্রতি ৩৬ টাকায়, আতপ চাল কেজিপ্রতি ৪৮ টাকায় এবং সিদ্ধ চাল কেজিপ্রতি ৪৯ টাকায় সংগ্রহ করা হয়েছে। বাড়তি দামের কারণে মিল মালিক ও কৃষকরা ধান-চাল বিক্রিতে আগ্রহী হয়েছেন। পাশাপাশি ধান-চাল সংগ্রহ কার্যক্রম সফল করতে সংশ্লিষ্টদের জোরালো নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। খাদ্য অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, বিগত বছরগুলোতে ধান-চাল সংগ্রহ কার্যক্রমে চাল সংগ্রহের পরিমাণ বেশি থাকলেও ধান সংগ্রহের হার ছিল তলানিতে।
২০২০-২১ অর্থবছর থেকে ধান সংগ্রহের হাল ছিল যথাক্রমে লক্ষ্যমাত্রার ৫.৫৫, ৯.৯১, ৩.১৩ ও ৯.৩৪ শতাংশ। আর ২০২৪-২৫ অর্থবছরে আমন ধান সংগ্রহের হার ছিল লক্ষ্যমাত্রার ২.৬৫ শতাংশ। তবে এবার বোরো মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার ৯৪ শতাংশ ধান ও ৭৯.৮০ শতাংশ চাল সংগ্রহ করা হয়েছে।
অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গত ২৪ এপ্রিল থেকে ধান-চাল সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু হয়েছে যা আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত চলবে। এবার বোরো মৌসুমে জেলায় ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ হাজার ১৫৯ টন। এর মধ্যে গত সপ্তাহ পর্যন্ত ৩ হাজার ৯২৪ টন ধান সংগ্রহ করা হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার ৯৪ দশমিক ৩৪ শতাংশ। আর ৬ হাজার ৬২৯ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে সংগ্রহ হয়েছে ৫ হাজার ২৯০ টন, যা লক্ষ্যমাত্রার ৭৯ দশমিক ৮০ শতাংশ। যা গত এক দশকের মধ্যে রেকর্ড।
জেলা খাদ্য অধিদপ্তরের উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. ফখরুল আলম জানান, ইতোমধ্যে নগরীর খাদ্যগুদামগুলোতে শতভাগ চাল সংগ্রহ করা হয়েছে। এ ছাড়া উপজেলা পর্যায়ে ধান সংগ্রহেও শতভাগের কাছাকাছি লক্ষ্য অর্জন করা হয়েছে। কৃষক ও মিল মালিকরাও ভালো দাম পেয়ে খুশি। বাকি সময়ের মধ্যে শতভাগ লক্ষ্য পূরণ হবে বলে আশা করা যায়।